Date : 2024-04-19

সাত রঙা রঙে অভেদ্য রহস্য নিয়ে বইছে নদী…

ওয়েব ডেস্ক: পৃথিবীতে বিচিত্র স্থানের অভাব নেই। কোন কোন স্থান হয়তো যত সুন্দর ততই দূর্গম। বিশালাকার জলপ্রপাতে সূর্যের কিরণ স্পর্শ করলে সাত রঙের মেলবন্ধনে আপ্লুত করে মানুষের মনকে। তবে এই চিত্র খুবই সাধারন। যে কোন জলপ্রপাতের সামনে গিয়ে দাঁড়ালেই আপনি দেখতে পাবেন। কিন্তু এমন কোন শান্ত নদীর নাম নিশ্চই শোনেননি যে কুল কুল ধারায় বয়ে যাওয়ার সময় সূর্যের সাত রঙকে বয়ে নিয়ে যায়। ঠিক তেমনই একটি জায়গা হলো কলম্বিয়ার ক্যানো ক্রিস্টালস। পৃথিবীতে এমন নদীও আছে যার জলে পাথর-শ্যাওলা-জলজ উদ্ভিদ ও নীল, লাল, হলুদ, সবুজ, কমলা, গোলাপী রঙের অসাধারন এক সমারোহ রয়েছে। আলাদা ভাবে অবিরাম এই সাত রঙকে বয়ে নিয়ে চলেছে নদীটি। তাই এই নদীকে অনেকেই “লিকুইড রেনবো” বা “রিভার অফ কালার” বলে।

রঙের সমুদ্র নিয়ে যেন স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে এই নদীটি। নদীর চারপাশ জীব বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ। কলম্বিয়া প্রদেশের মেটা শহরের সেরানিয়া-দে-লা-ম্যাকারিনা প্রদেশে এবং গায়েবেরো নদীর উপকূলে অবস্থিত এই মনোরম স্থানটি। যেখানে পৌঁছালে আপনার স্বর্গীয় সুখ অনুভুত হবেই। ক্যানো ক্রিসটেলস নামের এই নদীটি পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে ১০০ কিলোমিটার বয়ে গেছে। বছরের বেশিরভাগ সময় নদীটি স্বাভাবিক থাকে। আর দশটি পাহাড়ি নদীর মতোই এই নদীরও ধূসর পাথরের তলদেশ, শান্ত জল ও পরিস্কার স্রোত থাকে। শুধু মাত্র বর্ষার ঋতুতেই নদীটি পাঁচটি রঙে রঙিন হয়ে ওঠে।

তখন নদীর তলদেশে লাল লতা-গুল্মের মতো তরল পদার্থ নদীর স্রোতের সঙ্গে দুলতে থাকে। তার সঙ্গে কিছু পাথরের গায়ে জমে থাকা সবুজ শ্যাওলার আবরণ, কালচে পাথরের রং, হলুদ বালু ও ঝিলমিল স্বচ্ছ জলের নীলাভ আভায় স্বর্গীয় সৌন্দর্য্য ফুটিয়ে ওঠে। এই সৌন্দর্য্য আসে প্রাকৃতিক ভাবেই। নদীর বুকে ১২০০ মিলিয়ন বছরের পুরনো পাথরগুলো ধূসর রং ছেড়ে কালচে রং ধারণ করেছে যা স্বচ্ছ জলের স্রোতের নিচে দেখতে অসাধারণ লাগে। এছাড়া নদীর বালু ভাগ হলুদ রঙ ফুটিয়ে তোলে। নদীর এই রঙ ধারণের রহস্য প্রাকৃতিক খেয়ালেই হয়েছে। কেন এবং কিভাবে এই স্থান এমন সুন্দর তা এখনো বিজ্ঞানের ভাষায় অব্যক্ত। এই নদীর অববাহিকায় পৌঁছনো খুব সহজ নয়। গাইডের সাহায্যে বহু পাহাড়, টিলা পেড়িয়ে পৌঁছতে হয় এখানে। তবে কলম্বিয়া সরকারের উদ্যোগে এই স্থান বর্তমানে একটি জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট হয়েছে।