Date : 2024-04-20

শিবরাত্রিতে জানুন নরমাংস খাদক অঘোরীদের শিব উপাসনা

ওয়েব ডেস্ক: শিবের উপাসনা সংযম ব্যতিত সম্ভব নয়। শিবরাত্রিতে সকাল থেকে একফোঁটা জল মুখে না দিয়ে কত মানুষ অপেক্ষা করে আছেন প্রথম প্রহরে মহাকালকে অভিষেক করার জন্য। সারাদিন উপবাস থেকে মন্দিরে মন্দিরে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ক্লান্ত শরীরে মহাদেবের উপাসনা করেন ভক্তরা। কিন্তু হিন্দুধর্মে যে দেবতা তুষ্ট করতে মানুষ কঠিন থেকে কঠিন সংযমে উপাসনা করে থাকেন সেই শৈব উপাসক অঘোরী সাধুদের উপাসনার নিয়ম এবং কার্যকলাপ শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠবে।

শিবরাত্রি পশুপতিনাথের মন্দিরে পৌঁছে গেলেই আপনার সাক্ষাৎ হয়ে যাবে অঘোরী সাধুদের সঙ্গে। দুর্গম পাহাড় থেকে এরা একে একে বেরিয়ে আসেন শিব পুজোর জন্য। অঘোরী বলতে মূলত বীভত্‍স আচারে অভ্যস্ত শৈব সম্প্রদায়কে বোঝায় যাঁরা মহাকালের তপস্যায় গভীরভাবে বুঁদ হয়ে আছেন। অঘোরীদের সাধন পদ্ধতি যেমন ভয়ানক তেমনই এরা প্রবল ক্ষমতার অধিকারী। এরা বৃষ্টি বা খরার আহ্বান করতে পারেন যখন ইচ্ছে। ইচ্ছে মতো বদলে দিতে পারেন ঋতুচক্রও। আজও মণিকর্ণিকার ঘাটে অঘোরীদের দর্শন পেতে পারেন আপনিও। যদিও প্রবল শীতের সময় ছাড়া বছরের বাকি সময় হিমালয়ের গভীর জঙ্গলে লুকিয়ে থাকেন এরা। এদের উপাসনা পদ্ধতিও খুব অদ্ভুত। মল, মূত্র, পশুর মাংস, মানুষের মাংস, মদ সবই কাজে লাগে এই ধরনের তপস্যায়।

তবে এই তপস্যার কোন উল্লেখ যজুর্বেদ-এ নেই। শুধু অস্বাভাবিক খাওয়া দাওয়াই নয়, এরা মৃত দেহের সঙ্গে সাধনার জন্য যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে। এরা মৃতদেহ থেকে একধরনের তেল বের করেন যা দুরারোগ্য ব্যাধির ওষুধ। টানা ১২ বছর কঠোর সাধনার পর অঘোরী গুরুর আশীর্বাদে নিজের ধর্মীয় যাত্রা শুরু করেন অঘোরী সাধুরা। আর তখনই জন্ম হয় এক চরম সাধকের। যাঁদের বস্ত্র হয় মৃত ব্যক্তির জামা-কাপড়ের ছেঁড়া অংশ। শরীরে থাকে মৃত দেহের ছাই। এখানেই শেষ নয়, এমন সাধকদের সারা জীবন একজন গুরুর অধিনে থাকতে হয়। প্রত্যেক অঘোরী সাধু কে একজন গুরুর অধীনে থাকতে হয়। গুরু যা বলেন, সেইভাবে জীবনযাপন করতে হয়। সংগ্রহ করতে হয় মৃতদেহের খুলি, যা তাঁদের সাধনার প্রধান উপকরণ। এরা মন্ত্রোচারণ করতে শুরু করলে শরীরে একজন মানুষকে গায়েও করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।