Date : 2024-04-25

শিকার উৎসবে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের বার্তা বন দফতরের

পশ্চিম মেদিনীপুর: একসময় জীবন জীবিকার প্রয়োজনে শিকারের পথ বেছে নিয়েছিলেন জঙ্গল মহলের আদিবাসীরা।

প্রাথমিকভাবে খিদে মেটাতে এবং পরবর্তীকালে মৃত পশুর চামড়া ও অন্যান্য পদার্থ থেকে জীবিকা অর্জনের পথ বেছে নেন ঝাড়গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ।

সময় বদলেছে, ঝাড়গ্রাম অঞ্চলে পৌঁছেছে জল, খাদ্যদ্রব্য সামগ্রী, উন্নতি হয়েছে চাষ-আবাদেরও, ফলে শিকার ছেড়ে উন্নত গ্রামীন জীবন যাপন করছেন জঙ্গলমহলের মানুষ।

প্রাচীন রীতি মেনে আজও তাই শিকার উৎসব পালন করে ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের আদিবাসী মানুষ।

তাই বছরের বিশেষ তিনদিন দল বেঁধে পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে শিকারে যান আদিবাসীরা।

হাতে তির-ধনুক, লাঠি, বল্লম, সহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে আদিবাসীরা শুয়োর, সাপ, ইঁদুর, খরগোশ শিকার করে নিয়ে আসেন।

শিকার করা পশুর মাংস রান্না করে দল বেঁধে চলে খাওয়া দাওয়া।

বছরে এই তিনদিনের উৎসবের মধ্যে দিয়ে নিজেদের ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখেন আদিবাসীরা।

বৃহস্পতিবার লালগড়, পীড়াকাটা এলাকায় শতাধিক আদিবাসী মানুষ সশস্ত্র অবস্থায় জমায়েত হয়।

কিন্তু তাদের শিকারের শুরুতেই বুঝিয়ে বাড়ি ফেরায় বন দফতর।

পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভাগীয় বনাধিকারিক রবীন্দ্রনাথ সাহা জানান, এই উৎসবকে কেন্দ্র করে ঝাড়গ্রামের জঙ্গলে অসংখ্য পশু নিধন করে আদিবাসীরা।

জঙ্গলমহলের বাস্তুতন্ত্রের উপর খারাপ প্রভাব পড়ে এই শিকার উৎসবের ফলে।

শুধু পশ্চিম মেদিনীপুরের আদিবাসীরা নয়, বরং পার্শ্ববর্তী রাজ্য ওড়িশা, ঝড়খন্ড থেকেও অসংখ্য আদিবাসী মানুষ আসেন শিকার উৎসবে যোগ দিতে।

বনদফতরের তরফে পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে মানুষ আসা বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।

জেলা বন দফতর আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ সাহা জানান, শিকার উৎসব পালনের বদলে বন্য সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়াতে হবে আদিবাসী মানুষদের মধ্যে।

তবেই সম্পূর্ণভাবে বন সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব হবে।

এই ধরনের উৎসব পালনের বদলে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের উৎসবে তাদের উৎসাহিত করতে হবে।

প্রসঙ্গত গত বছর এই সময় আদিবাসীদের শিকারের ফলে মারা গিয়েছিল একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।