ওয়েব ডেস্ক: পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট এই বিষয়ে দ্বিমত নেই, কিন্তু এভারেস্টকে গ্রাস করতে পারে এমন জায়গাও আছে এই গ্রহেই।
বিশ্বের গভীরতম এবং রহস্যময় এই খাতটি অবস্থিত প্রসান্ত মহাসাগরে।
মারিয়ানা দ্বীপের নিকটে অবস্থিত হওয়ায় এই খাতটির নাম মারিয়ানা ট্রেঞ্চ।
মারিয়ানা খাত একটি বৃত্তচাপের আকারে উত্তর-পূর্ব থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ২৫৫০ কিমি ধরে বিস্তৃত।
এর গড় বিস্তার ৭০ কিমি।
ইংরাজীর V অক্ষরের মতে দেখতে এই খাতটির গভীরতা ১১,০৩৩ মিটার।
“এইচ এম এস চ্যালেঞ্জার ২” নামে একটি জাহাজ ১৯৪৮ সালে প্রথম এই খাতের গভীরতা নির্ণয় করে তাই জাহাজের নাম অনুসারে এর নাম রাখা হয়েছে। ১৯৬০ সালের জানুয়ারি মাসে ইঞ্জিনিয়ার জাক পিকার ও মার্কিন নৌবাহিনীর লিউট্যান্যান্ট ডনাল্ড ওয়ালশ ফরাসি সাবমেরিন ‘বাথিস্কাফ ত্রিয়েস্ত’-এ করে চ্যালেঞ্জার ডীপে অবতরণ করেন। জাক ও ডনাল্ড ত্রিয়েস্তকে ১০,৯১৫ মিটার গভীরতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হন।
এটি ইতিহাসের সবচেয়ে গভীরতম ডুব। সেখানে গিয়ে তারা যা দেখেন তা সত্যিই অবিশ্বাস্য।
যেখানে জলের চাপ প্রতি বর্গ মিটারে ৩ লক্ষ টন সেখানে বহাল তবিয়তে বাস করছে অমেরুদন্ডী প্রানী।
সেই প্রানীদের সঙ্গে মিল নেই সমুদ্রপৃষ্ঠের জীবদের। সবচেয়ে বড় রহস্য ‘বাথিস্কাফ ত্রিয়েস্ত’ সাবমেরিনটি জলের সবচেয়ে নীচে পৌঁছতেই বিশালাকার একটি প্রাণীর সম্মুখীন হয়। গভীর অন্ধকার থাকায় সেই প্রাণীটিকে পর্যবেক্ষণ করত পারেনি বিজ্ঞানীরা। পলকে গায়েব হয়ে গেছিল বিশালাকার প্রাণীটি। সমুদ্রের ওই চাপে মেরুদন্ডী কোন প্রাণীর পক্ষেই বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। তবে এতবড় জন্তুটি কিভাবে সেখানে চলাফেরা করছে তা আজও প্রশ্নের কারণ। এই খাতে ১০০০ মিটারের পর থেকে আর আলো পৌঁছায় না।
তাই এখানে সময় থেমে গেছে রাতের আধাঁরেই।
তবুও অদ্ভুত প্রজাতির হিংস্র প্রাণীরা কিভাবে জীবনধারণ করে তা এখনও রহস্য। কখনো হাইড্রোজেন সালফাইডসহ বিভিন্ন ধরনের খনিজ সমৃদ্ধ গরম জল বের হয় চ্যালেঞ্জার ডিপের ছিদ্রপথ দিয়ে। এখানে অবস্থিত ব্যক্টেরিয়ারা এসব খেয়ে বেঁচে থাকে। মৃত প্রাণীর দেহ জমা হওয়ায় এই অংশের জল কিছুটা হলুদ। প্রশান্ত মহাসাগর এতটাই রহস্যপূর্ণ যে মাত্র ৫ শতাংশই জানতে পেরেছে মানুষ।