Date : 2024-04-23

#ভোটের ব্যারোমিটার: নজরে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্র

ওয়েব ডেস্ক: এপ্রিলের মধ্য গগনে একদিকে বাড়ছে প্রকৃতির উত্তাপ। অন্যদিকে সবে মিটেছে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ। বাকি এখনও পাঁচ দফা। ফলে পাল্লা দিয়ে প্রচারের তাপ ও উত্তাপ দুইই চড়ছে।

সেই উত্তাপে পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গও। রাজ্যের ৪২ টি আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। কারও হাতিয়ার পাঁচ বছরের কাজের খতিয়ান, কারও আবার ঢালাও প্রতিশ্রুতি।

ভোটের উত্তাপ ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে মহানগর থেকে জেলায়। কি ভাবছে জেলা? বিগত পাঁচ বছরে কতটা প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়েছে?

আগামী দিনে ক্ষমতায় নতুন সরকার এলে তার কাছেই বা প্রত্যাশা কী? মানুষের খবর নিতে আরপ্লাস নিউজ পৌঁছে গেছে একেবারে গ্রাউন্ড জিরোয়। আজ নজরে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্র

#ভোটের ব্যারোমিটার: নজরে কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্র

ইতিহাস আর স্থাপত্য সেখানে মিলে মিশে একাকার। রাজ্যের বুকে সে যেন এক টুকরো লালমাটির দেশ, বিষ্ণুপুর। খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দী থেকে ব্রিটিশ শাসনের সূচনা পর্যন্ত প্রায় এক সহস্রাব্দ কাল বিষ্ণুপুরের ইতিহাস হিন্দু মল্ল রাজবংশের উত্থান ও পতনের সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। শুধু মন্দিরনগরী নয়, লোকস্রুতি ১৩৭০ খ্রীষ্টাব্দে মল্ল রাজদরবারে বিষ্ণুপুর ঘরানার সঙ্গীতের সূত্রপাত হয়। শহরজুড়ে ছড়িয়ে ছিড়িয়ে থাকা নানা টেরাকোটার স্থাপত্য আজও অমলিন। যা ক্রমাগত বিস্মিত করে চলেছে প্রতিদিন কয়েক হাজার দর্শককে।

প্রথম দফাতেই রক্তাক্ত লোকসভা নির্বাচন, মৃত ১

২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বিষ্ণুপুর। স্বাধীনতার পর মাত্র ২ বারই কংগ্রেসের দখলে ছিল বিষ্ণুপুর লোকসভা আসনটি। তারপর ১৯৭১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এলাকা দখলে রাখে বামফ্রন্ট। তবে বিষ্ণুপুরের ভোটের উত্তাপকে এবার কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে নির্বাচনের দিনকয়েক আগে দলবদলের রাজনীতি। বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। যাঁকে এখনও তৃণমূলের বদলে বিজেপির প্রার্থী বলতে হোঁচট খান অনেকেই। অন্যদিকে গত বিধানসভা নির্বাচনে যিনি জিতেছিলেন কংগ্রেসের টিকিটে সেই ব্যাক্তি এবার নাম লিখিয়েছেন তৃণমূলে। সবমিলিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির ভোটকাটাকুটির খেলায় ফায়দা তুলতে চাইছে সিপিআইএম। সবমিলিয়ে ভোটয়ুদ্ধে জমজমাট বিষ্ণুপুর লোকসভা  কেন্দ্র।

#ভোটের ব্যারোমিটার: নজরে হুগলী লোকসভা কেন্দ্র

বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭ টি বিধানসভা
বড়জোড়া, ওন্দা, বিষ্ণুপুর, কোতলপুর, ইন্দাস, সোনামুখী, খণ্ডকোষ

বছরকার আমজনতা এই ভোটের মরশুমে যেন চালকের আসনে। পরিবর্তন নাকি প্রত্যাবর্তন, সব হিসেব থাকে তাদের হাতেই। কী ভাবছেন সেখানকার মানুষ? অনেকের মতে তৃণমূল জমানায় বিষ্ণুপুরের উন্নয়ন হয়েছে চোখে পড়ার মতো। আবার অনেকে বলছেন, ১৮ থেকে ৪০ বছরের ছেলেমেয়েরা এবার ভোটবক্সে এবার কী রায় দেবেন তা নিয়ে ধন্ধ রয়েছে। কর্মসংস্থানের অভাব যার অন্যতম কারণ। কারোর মতে, “প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার কথা মুখে শুনলেও কাজে ততটা দেখা যাচ্ছে না। রাজ্য সরকারের  ক্ষমতা সীমিত। এবং শুধুমাত্র সরকারি চাকরির উপর নির্ভর করে বেকারত্ব ঘুচবে বলে মনে হয় না।”

#ভোটের ব্যারোমিটার: নজরে পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্র

বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্র

তৃণমূল প্রার্থীঅধ্যাপক শ্যামল সাঁতরা
বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ
সিপিআইএম প্রার্থীসুনীল খাঁ

জয় নিয়ে কতটা আত্মবিশ্বাসী প্রার্থীরা? জানালেন আরপ্লাস নিউজের মুখোমুখি হয়ে।

তৃণমূল প্রার্থী অধ্যাপক শ্যামল সাঁতরার কথায় উন্নয়নের নিরিখে এগিয়ে তাঁরাই। এবারের লড়াই কি একটু টাফ? উত্তরে শ্যামল বাবু জানান,“আমাদের কাছে কোনও কিছুই টাফ নয়, তৃণমূল-কংগ্রেস সারা বছর মানুষের পাশে থাকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের বাড়িতে বাড়িতে উন্নয়ন পৌঁছে দিয়েছেন।” জয় নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই তৃণমূল প্রার্থী অধ্যাপক শ্যামল সাঁতরার।

প্রযুক্তির ভিড়ে স্মৃতির শেষ পাতায় নাম লেখাতে চলেছে টাইপ রাইটার

অন্যদিকে এলাকার বিদায়ী সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। ৩৮ বছর বয়সী এই তরুণ তুর্কী নেতা বহুবার সংসদে নানান ডিবেটে অংশ গ্রহণ করেন। সংসদে তাঁর উপস্থিতির হার ৬৫ শতাংশ। গত ৮ জানুয়ারী তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন। তার ২৪ ঘন্টা পেরোতে না পেরোতেই নাম লেখান পদ্ম শিবিরে। আদালতের নিষেধজ্ঞা থাকায় কেন্দ্রে গিয়ে প্রচার করতে পারছেন না বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ

তাঁর হয়ে আসরে নেমেছেন তাঁর স্ত্রী সুজাতা খাঁ। তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইটা কী এবার একটু চ্যালেঞ্জিং? আরপ্লাস নিউজের মুখোমুখি হয়ে সুজাতা জানান, “বুথ লেভেল থেকে উপরের লেভেল পর্যন্ত সকলের প্রচুর সাহায্য পাচ্ছি। তবে ওদের(তৃণমূলের) নোংরামোটাই একটু চ্যালেঞ্জিং। প্রার্থীকে জেলায় ঢুকতে দিচ্ছে না। এর জবাব ১২ মে বিষ্ণুপুর লোকসভার জনগন ভোট বাক্সে দেবে।”

পলিথিনের শহরে অনাদরে ‘সহজ পাঠ’-র ‘বংশী বদন’রা

এদিকে তৃণমূল-বিজেপির প্রেস্টিজ ফাইটে ফায়দা তুলতে মরিয়া বাম শিবির। বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআই(এম)প্রার্থী সুনীল খাঁ প্রচারে বিপুল সাড়া ফেলেছেন। তিনি বলেন,“এই লড়াই নীতির সঙ্গে নীতির লড়াই। বহু মানুষ ১০০ দিনের কাজ পায়নি। পশ্চিমবঙ্গে যখন বামফ্রন্ট ছিল, কোনো কৃষক সুইসাইড করেনি।” প্রচারের রেসপন্স ভোটবাক্সে প্রতিফলিত হলে জয় নিশ্চিত, এমনটাই মনে করেন বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআই(এম)প্রার্থী সুনীল খাঁ।

শ্রীলঙ্কায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা

সবমিলিয়ে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। জিততে মরিয়া বাম-বিজেপি-তৃণমূল। তৃণমূলের দাবি প্রার্থী নয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নই হবে ভোটে বাজিমাৎ করার ট্রাম্প কার্ড। তবে রাজনীতির অন্য কোনো নয়া সমীকরন দেখবে কী বিষ্ণুপুরবাসী, সময় বলবে।