Date : 2024-03-29

হলুদ চাকতির স্বপ্ন…

কলকাতা: ওরা কাজ করে, ওরা দিনের শেষে স্বপ্ন দেখে একটা ভালো জীবনের। ওরা আজও স্বপ্ন দেখে সুশাসনের। যারা তাদের রোজকার না পাওয়াগুলো থেকে একটু হলেও ছুটি দিতে পারবে। এই কলকাতার বুকেই অনেক পরিবারের আজও নির্দিষ্ট রোজগার নেই। তাই দুবেলা দুমুঠো অন্ন সংস্থান করতে পরিবারের মহিলারাও হয়েছেন স্বনির্ভর। কারোর স্বামী হারিয়েছেন তাদের চাকরি, কেউ আবার অসুস্থতার বশে আজ প্রায় মৃত্যুসজ্জায় তাই সংসার চালানোর সমস্ত দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন নিজেদের কাঁধেই।

তাদের লড়াই শহরের বাকি সবার থেকে অনেকটাই আলাদা। তাঁরা বেছে নিয়েছেন নিজেদের বেঁচে থাকার পথ। রুজিরোজগারের জন্য তৈরি করছেন পাঁপড়। রোজ সকাল থেকে সংসারের সমস্ত কাজ সামলে, ছেলে মেয়েকে স্কুল কলেজে পাঠিয়ে দিনের বাকি সময়ে তারা পাঁপড় তৈরি করেন। প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘন্টা সময় দেন তাঁরা এই পাঁপড় তৈরির জন্য। দক্ষিণ কলকাতার বুকে চেতলা অঞ্চলের বহু মহিলাই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। দিনে এক কিলো পাঁপড় তৈরি করলে মেলে ৪৭ টাকা।

সেই টাকাতেই ওদের চলে সংসার খরচ। ছেলে মেয়ের পড়াশুনা থেকে শুরু করে রোজকার ভাত, সবেতেই তাঁদের একমাত্র ভরসা এই পাঁপড় তৈরির কাজ। রোজ ভোরবেলা কোম্পানি থেকে তাঁদের দেওয়া হয় মশলা ও ডাল দিয়ে মাখা আটার লেচি। আর সেই লেচি কেটে তা বেলেই তৈরি হয় পাঁপড়ের অবয়ব। তবে পুরো কাজ শেষ হয় পাঁপড়গুলিকে রোদে শুকানোর পরে। তাদের বাড়ির ওই ছোট্ট গলিগুলিতেই চলে পাঁপড় শুকানোর কাজ।

পরেরদিন সকালে গিয়ে জমা দিতে হয় সেই পাঁপড়। তারপর মেলে টাকা। সারা ভারত এখন মেতে ভোট উৎসবে এবং হাজার কাজের মাঝেও এই মহিলারা ভোট দেবেন। এক নতুন দিনের আশায়। ভালো ভাবে বাঁচার আশায়। তাঁদের নতুন সরকারের কাছে খুব সামান্যই আবেদন, তাদের সুবিধা অসুবিধার কথাটা যেন একটু ভাবেন তাঁরা। মাথার উপর ছাদ, খাওয়ার জলের সুবিধা, এবং রোজগারের সুযোগ এই ছোটো ছোটো আশা পুরণই তাঁদের কাছে এনে দিতে পারে এক সুন্দর পৃথিবী। কেমন আছেন তাঁরা? তাঁদের নিয়ে আরপ্লাস নিউজের বিশেষ প্রতিবেদন, “ওরা থাকে ওধারে…”