Date : 2024-04-19

কাবুলের শামসিয়া ক্ষত ঢাকছে রঙে…

ওয়েব ডেস্ক:  কাবুলের ক্ষতবিক্ষত দেওয়ালগুলো ভরে উঠেছে একটি দুঃখী মেয়ের পিয়ানো বাজানো ছবিতে। আবার কোথাও মেয়েটি বসে আছে শেষ হয়ে যাওয়া রাস্তার ধারে। এমন ছবিই আঁকলেন শামসিয়া হাসানি। তিনি হলেন একজন পথচিত্র শিল্পী। আফগানিস্তানের মতো রক্ষণশীল একটি দেশের কোনও মহিলার পক্ষে এই কাজ রীতিমতো দুঃসাহসিক।

আফগানিস্তানে বুলেট-বোমায় ক্ষতিগ্রস্ত দেওয়ালকেই তিনি পরিণত করেছেন আস্ত ক্যানভাসে। তাতেই ছড়িয়ে দিয়েছেন রং। তবে কাজটা মোটেই সহজ ছিল না। কারণ দূর থেকে দেখলে কাজটা যতটা সহজ ও সুন্দর মনে হয়, কাবুলের রাস্তায় ছবি আঁকার বিষয়টি কিন্তু মোটেই ততটা সহজ নয়। তা-ও আবার কোনও মহিলার পক্ষে।

স্প্রে-পেন্টের বোতল হাতে একটি গ্রাফিতি আঁকার জন্য বড়জোর ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় পান তিনি। কারণ ততক্ষণে কুকথা ও গালাগালিতে ভরে যায় তাঁর আশপাশ। এমনকী পাথর ছুড়েও মারা হয়েছে তাঁর গায়ে। তবে এ সব নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা নেই শামসিয়ার। ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকার প্রতি উৎসাহ ছিল তার।

মেয়ের আঁকাআঁকির বিষয়ে উৎসাহও দিতেন শামসিয়ার মা-বাবা দুজনই। শামসিয়ার বয়স তখন ১৬। কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্র্যাডিশনাল পেন্টিং নিয়ে পড়ার সুযোগ পান তিনি। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরে গ্রাফিতি আর্টের মধ্যে নিজেকে বেশি খুঁজে পান শামসিয়া। সেই শুরু। তার পর থেকেই পথে পথে ছবি এঁকে চলেছেন শামসিয়া। আর সেই ছবিগুলোয় ফুটে উঠছে শান্তি আর আশার বার্তা।

প্রতি দু’তিন মাস অন্তর শামসিয়া নতুন নতুন গ্রাফিতি তৈরি করেন।আফগানিস্তানে আর্ট গ্যালারি নেই। কিন্তু পরিত্যক্ত দেওয়াল অসংখ্য। আর তাই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া মানুষের কাছে শিল্পকে ব্যাপক আকারে পৌঁছে দিতে এই গ্রাফিতি বেশ সুবিধাই হয় তার। যুদ্ধের নানা রুপ আছে। শিল্প তার মধ্যে সবথেকে বড় জায়গা দখল করে, তা আরও একবার বুঝিয়ে দিল শামসিয়া হাসানি।