Date : 2024-04-23

৭৯ বছর বিদ্যুৎ ছাড়া থাকলেন পুনের অধ্যাপিকা

ওয়েব ডেস্ক: কোনোদিন একটা গোটা দিন মোবাইল বা টিভি ছাড়া কাটাতে পারবেন? বা এই গরমে পাখা ছাড়া, বা প্রচন্ড ঠান্ডায় গিজারের গরম জল ছাড়া স্নান করতে পারবেন? এইসব করা তো দূরেরই কথা, ভাবতে গেলেই বরং গায়ে জ্বর আসে। তাই না? তবে জানেন কি, হেমা সানে সাবিত্রীবাঈ যিনি ৭৯ বছর কাটিয়ে দিলেন বিদ্যুৎ ছাড়া। তাঁর বন্ধু কেবল গাছ আর পশু পাখিরা। পুণে বিশ্ববিদ্যালয়ে বোটানিতে পিএইচডি করেন তিনি এবং বহু বছর ধরেই পুণের গারওয়ারে কলেজে অধ্যাপনা করেন। তাহলে হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কেন? হেমা বলেন, “খাদ্য, আশ্রয় এবং পোশাক আমাদের মৌলিক চাহিদা। এক সময়ে তো বিদ্যুৎ ছিল না, অনেক পরে মানুষ বিদ্যুৎ পেয়েছে। আমি বিদ্যুৎ ছাড়াই দিব্যি থাকতে পারি।”

ডাঃ হেমা সানের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী বা তাঁর সাহচর্য সবই হল তাঁর কুকুর, দুই বিড়াল, এক নেউল এবং পাখিরা। এবং তিনি আরও বলেন, “মানুষ আমাকে বোকা বলে, আমি উন্মাদ হতেই পারি কিন্তু এটা আমার কাছে কোনও ব্যাপার নয় কারণ এটাই আমার জীবনের ‘অদ্ভুত’ পথ। আমি যেমন পছন্দ করি তেমনই জীবন যাপন করতে পারি।”

বুধওয়ার পেটের একটি ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে বসবাস করেন হেমা। ওনার সকাল শুরু হয় পাখিদের শব্দে ও রাত্রি নামে লম্ফের আলোতে। উদ্ভিদবিদ্যা ও পরিবেশ বিষয়ে ডাঃ হেমা সানে অনেক বইও লিখেছেন। এমনকি আজও, যখনই তিনি তার বাড়িতে একা থাকেন তখনই তিনি নতুন বই লেখেন। পরিবেশ সম্পর্কে তাঁর গবেষণা এমনই যে কোনও পাখি বা গাছ তাঁর কাছে অজানা নয়।

তাঁর কথায়, “এই পাখিরাই আমার বন্ধু এবং যখনই আমি বাড়ির কাজ করি তখনই ওরা আসে। মানুষজন প্রায়ই আমাকে জিজ্ঞেস করে, ঘরটা বেঁচে দিচ্ছেন না কেন, অনেক তো টাকা পাবেন! আমি ওদের সবসময় বলি, বেঁচে দিলে কে এই গাছেদের পাখিদের যত্ন নেবে? আমি বাইরে যেতে চাই না তো। আমি তো ওদেরই সাথে থাকতে চাই!” আর যারা তাঁকে পাগল বলে, তাঁদের কী বলেন হেমা? প্রকৃতির এই মানুষ বলেন, “আমি কাউকে কোন বার্তা বা জ্ঞান দিই না, বরং আমি বুদ্ধের বিখ্যাত কথাটাই উচ্চারণ করি, বুদ্ধ বলেছেন, নিজের জীবনের পথ নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে।”