Date : 2024-04-23

ঠোক্কর খেয়ে নয়, মোবাইলে ঘাড় গুঁজে থাকলে ‘শিং’ গজাতে পারে

ওয়েব ডেস্ক: প্রয়োজন ছাড়াও মোবাইলে চোখ বুলিয়ে চলেন? দরকার না থাকলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় উঁকি দেন? চিকিৎসকরা এই অভ্যাস বর্জন করতে বললেও কর্ণপাত করেন না কেউই। না চিকিৎসকের কথা শুনতে হবে না, বায়োমেকানিক্স যা বলছে তা শুনলে চমকে উঠবেন। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব সানশাইন কোস্টের(ইইউএসসি) গবেষকরা এ বার দাবি, মোবাইল নামের এই ছোট্ট যন্ত্রটি আপনার শরীরে হাড়-কঙ্কালের গঠন একেবারে বদলে দিচ্ছে ধীরে ধীরে। ঘাড় নিচু করে মোবাইল চালানোয় মানুষের ঘাড়ের হাড়েক কাছ থেকে শিং গজানোর উপক্রম তৈরি হচ্ছে। বিশ্বাস না হলেও এটাই গবেষনার ফলাফল।

বিজ্ঞানীদের কথা, অত্যধিক ঘাড় নিচু করে থাকার ফলে আপনার ঘাড়ের পিছন থেকে পাখির বাঁকানো ঠোটের মতে বৃদ্ধি হতে পারে। দিন পরিবর্তনেরর সঙ্গে সঙ্গে ঘাড়ের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসতে পারে শিং-এর মতো এই উঁচু অংশটি। ‘নেচার’পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে গবেষকরা জানিয়েছেন, “তরুণ প্রজন্মের ব্যবহারিক জীবনের উপর প্রযুক্তির এই প্রভাব ভবিষ্যত্‌কে যে পথে ঠেলে দিচ্ছে, তা বেশ শঙ্কার।” এই বিষয় নিয়ে ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ের প্রধান গবেষক ডেভিড শাহার জানান, “হঠাৎ করে এই পরিবর্তন আসে না।

বছরের পর বছর একই ভাবে মোবাইল ঘাঁটতে ঘাঁটতে এই সমস্যা তৈরি হয় শরীরে। মূলত ছোটবেলা থেকেই অতিরিক্ত মোবাইল ঘাঁটার ‘অসুখ’ থেকেই এই রোগের জন্ম। সারা ক্ষণ মোবাইল হাতে বুঁদ হয়ে থাকা মানুষ, বিশেষত তরুণ প্রজন্মই এর প্রধান শিকার।” অস্ট্রেলিয়ায় এই সমস্যাকে ইতিমধ্যেই ‘হেড হর্ন’, ‘ফোন বোনস’বা ‘উইয়ার্ড বাম্পস’ নামেও ডাকা হচ্ছে।

অত্যাধিক মোবাইল ব্যবহার এবং প্রায়ই ঘাড়ের যন্ত্রণায় কাবু হয়ে যাওয়া ১৫০ মানুষের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে এদের ঘাড়ের পিছনের অংশে একধরনের গ্রোথ বা হাড়ের অসম বৃদ্ধি হয়েছে। যাদের উপর সমীক্ষা চালানো হয়েছে তাদের বেশিরভাগের বয়স ১৮ থেকে ৩০ এর মধ্যে।

তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এত মাইগ্রেন, চোখের সমস্যা, মাথা ধরা, মানসিক চাপ, ডিপ্রেশন সবই কিন্তু কমবেশি এই ধরনের প্রযুক্তিগত কারণেও হয়। সারা ক্ষণ ফোনে ব্যস্ত থাকায় ঘর্ষণ জনিত কারণে কড়া পড়ে ত্বকে। পুরু হয় চামড়াও। কিন্তু এত কুপ্রভাবেও টনক নড়ছে কই?’’ এই সমস্যা থেকে বাঁচতে একমাত্র ভিলেন মোবাইল ফোনের ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, এমনটাই বলছে গবেষক সংস্থা।

তৎক্ষণাৎ এই সমস্যা থেকে বাঁচার উপায় নেই। তবে এই নিয়মগুলো পালন করলে সমস্যা কিছুটা মিটতে পারে।

  • মোবাইল ফোনে সিনেমা দেখার সময় কোন উঁচু জায়গায় স্ট্যান্ডে রেখে সিনেমা দেখুন।
  • টেবিলের উপর রেখে ল্যাপটপ ব্যবহার করুন।
  • বেশি মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহারের অভ্যাস থাকলে ১০ মিনিট অন্তর মোবাইল থেকে সরে গিয়ে ঘাড়ের ব্যায়াম করুন।

ঘাড়ে ব্যাথা অনুভুত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।