ওয়েব ডেস্ক: ওরা “তৃতীয় লিঙ্গ”। আর এই “তৃতীয়” স্থানে থাকার জন্যই হয়েছে যত সমস্যা।
“ওদের” দিকে তাকানো যায় না, বড়ই অদ্ভুত ওদের চেহারা। শুধু তাই নয়, “ওদের” মানুষ বলে গণ্য করাটাও বেশ মুশকিলের।
আচ্ছা একবারও কী এটা মনে হয়? যে হয়তো ওরাই ঠিক, আপনারাই আসলে প্রথম থেকে ভুল।
আইন যতই ৩৭৭ ধারা মেনে নিক না কেন, সাধারণ মানুষ এখনও মানতে নারাজ রুপান্তরকামীদের।
ওরা আজও আমাদের কাছে “তৃতীয় লিঙ্গ”ই। ধারণা পাল্টানো সোজা নয়, তবে হয়তো অতটা কঠিনও নয়। আমরা সবাই জানি ভারত একটি উন্নয়নশীল দেশ। তবে ভারতকে “তৃতীয় বিশ্ব” থেকে প্রথম বিশ্বে আনার দায়িত্বটাও কিন্তু আমাদেরই।
সেই দায়িত্বের পথেই প্রথম পা-টা বাড়াল বিহার সরকার। এবার থেকে লিঙ্গ পরিবর্তনের কারণে অস্ত্রোপচারের জন্য রূপান্তরকামী মানুষদের দেড় লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য দেবে বিহার সরকার। তবে এখানেই শেষ নয়।
ওই সম্প্রদায়ের মানুষজনদের বাড়িভাড়া দিতে অস্বীকার করলে অথবা তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করলে ছ’মাস থেকে দু’বছরের কারাবাসের শাস্তিও হবে।
তাঁদের সাহায্যার্থে একটি বোর্ডও গঠন করেছেন নীতীশ কুমার সরকার। গত রবিবার পাটনায় ‘কিন্নর মহোৎসব’ নামক একটি অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে এই কথাটি ঘোষণা করেন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার।
ট্রান্স মানুষেরাও যাতে বাকি আর পাঁচটা মানুষের মতোই ভালোভাবে আমাদের সমাজে বাঁচতে পারেন এবং তাঁরা যাতে বৈষম্যের শিকার না হন সেই কারণবশতই এই উদ্যোগ। সুশীল কুমার আরও বলেন, ‘‘অন্য রাজ্যের ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের মানুষরা কী কী সুযোগসুবিধা ভোগ করেন, তা-ও দেখবে বোর্ড।
যাতে এ রাজ্যেও সেগুলি চালু করা যায়।’’ সারা ভারতের মধ্যে বিহারেই প্রথম এমন একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সারা ভারতের সবকটি রাজ্যেই যেন এমন নিয়মের সূচনা ঘটে সেটাই আশা রুপান্তরকামীদের।
তবে শুধু সম্মান, নিরাপত্তাই নয়, করতে হবে ওদের কর্মসংস্থানও। তাহলেই সমস্ত দিক থেকেই মাপকাঠিতে সমান হতে পারবে রুপান্তকামীরাও। তবে আশা করা যায়, বিহারের পাশাপাশি ঠিক এইভাবেই একদিন সারা ভারতে আর কোনো কাঁটাতার থাকবে না রুপান্তকামীদের জীবনে। ওদেরকে কেউ আর “তৃতীয়” তালিকায় ফেলে হেও করবে না। ওরাও আমাদের সবার মতোই মাথা উঁচু করে স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারবে।