Date : 2024-04-23

ভোলবদল ভুস্বর্গে…

ওয়েব ডেস্ক: কাশ্মীরিয়ত নয়, ভারতবাসী হোক প্রত্যেক কাশ্মীরবাসীর আসল পরিচয়। স্বাধিনতা দিবসের প্রাক্কালে এভাবেই বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা হারাল জম্মু কাশ্মীর। সোমবার রাজ্য সভায় সংবিধানের ৩৭০ ধারা ও ৩৫A ধারা প্রত্যাহারের প্রস্তাব পেশ করেন  স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত সাহ।

কেন্দ্রের সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হলে রাষ্ট্রপতি সেই বিজ্ঞপ্তিতে সই করে এই প্রস্তাবকে শিলমোহর দেন। পূর্জন্ম হয় ভুস্বর্গের। ১৯২৭ ও ১৯৩২ সালে কাশ্মীরের তৎকালীন মহারাজা হরি সিং যে দুটি ডিক্রি জারি করেছিলেন ১৯৪৭ সালে স্বাধীন ভারত কাশ্মীরের সেই অধিকারকে মান্যতা দেয়। এরপর জল গড়িয়েছে অনেক দূর।

১৯৪৯ সালে শেখ আবদুল্লা ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরুর দ্বীপাক্ষিক আলোচনায় কাশ্মীরে বলবৎ হয় ৩৭০ ধারা ও ৩৫A ধারা। ৩৭০ ধারার সৌজন্যে কাশ্মীরকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়। এই ধারাবলেই ১৯৫৬ সালে কাশ্মীরের নিজস্ব সংবিধান তৈরি হয়।

ফলে প্রতিরক্ষা বিদেশনীতি ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া বাকি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার ও ক্ষমতা থেকে যায় জম্মু কাশ্মীর বিধানসভার হাতে। অন্যদিকে ৩৫A ধারা মান্যতা পাওয়াতে জম্মু কাশ্মীরে স্থায়ী বসবাসকারী অস্থাবর সম্পত্তির মালিক এবং চাকরি ও শিক্ষায় সংরক্ষনের বিষয়গুলি ক্ষমতা ন্যাস্ত থাকে জম্মু কাশ্মীরের প্রশাসনের হাতে। বর্তমানে এই সুবিধাগুলি ও বিষেশ রাজ্যের মর্যাদা আর ভোগ করতে পারবে না কাশ্মীর প্রশাসন। আর পাঁচটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বা রাজ্যের মতোই কাশ্মীরে প্রয়োগ হবে ভারতবর্ষের সংবিধান।

ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ জম্মু কাশ্মীরকে পৃথক একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার প্রস্তাব রেখেছেন। অন্যদিকে লাদাখকে আরও একটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে জম্মু কাশ্মীরে কেন্ত্র শাসিত অঞ্চল থাকলেও সেখানে বিধানসভার সংস্থানের প্রস্তাব পেশ হয়েছে। কিন্ত আপাতত লাদাখকে থাকতে হবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের তকমা নিয়েই।

ইতিমধ্যেই বিজেপি কাশ্মীর প্রসঙ্গে যে বিতর্ক তুলে ধরেছে তা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। কিন্তু বিরোধিদের সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়ে ব্যাপক সেনাসমাবেশের মাধ্যমে কাশ্মীরের সুবিধাবাদী রাজনীতিকে কি আদৌ কোণঠাসা করতে পারবে বিজেপি সরকার? নাকি এই বিতর্কের ঝড় পৌছে যাবে ইউনাইটেড নেশনের দোরগোড়ায়? তার উত্তর দেবে একমাত্র ভবিষ্যত।