ওয়েব ডেস্ক: সময়টা ১৯৯২ সাল, বাবরি মসজিদ ধ্বংসকে কেন্দ্র করে দেশের কোণায় কোণায় ছড়িয়ে পড়তে থাকে সাম্প্রদায়িক হিংসার আগুন। বিষয়টা অভ্যন্তরীণ হলেও প্রতিবেশি দেশ পাকিস্তানে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রভাব পড়ে। হিংসার রোষানলে পাকিস্তানে বেশ কিছু হিন্দু মন্দির ধ্বংসের চেষ্টা হয়। সে দেশের শিয়ালকোটে একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দির হিংসার জেরে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। স্বাধীনতার পর দেশভাগের সময় থেকে এই মন্দির বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পুজোপাঠ। সেই থেকে প্রায় ৭২ বছর পর ফের পাকিস্তানি হিন্দুদের কাছে খুলে গেল বন্ধ মন্দিরের দরজা।
পাকিস্তান সরকারের উদ্যোগে সম্প্রতি এই মন্দির খুলে দেওয়া হয় হিন্দু পূর্ণার্থীদের জন্য। মন্দিরের আধিকারীকদের দাবি, স্থানীয় হিন্দুদের কথা মেনেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান সরকার। মন্দিরটির বয়স প্রায় ১০০০ বছরেরও বেশি।
শাওয়ালা তেজা সিং নামে এই প্রাচীন মন্দিরটি অবস্থিত শিয়ালকোটের ঘিঞ্জি ধারোয়াল এলাকায়। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোর থেকে ১০০ কিমি দূরে অবস্থিত। পাকিস্তানে সংখ্যালঘু ধর্মীয় স্থানের দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে উদ্বাস্তু ট্রাস্ট প্রপার্টির হাতে। স্থানীয় হিন্দুদের দাবি মেনেই দেশভাগের পর এই মন্দিরের সংস্কার করে তা পুনঃরায় খুলে দেওয়া হল সাধারণ মানুষের জন্য।
ট্রাস্টের তরফে জানানো হয়েছে এলাকায় ইতিমধ্যে প্রায় ২০০০ হিন্দু বসবাস করে। এরা প্রত্যেকেই এই মন্দিরে যেতে পারবেন, এমনকি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে হিন্দুরা আসতে পারেন। ভারতবর্ষ থেকে দর্শনার্থীরাও এই মন্দিরে পুজো দিতে আসতেই পারেন বলে ট্রাস্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে পাকিস্তানে এখন প্রায় ৭৫ লক্ষ হিন্দুর বাস। তারাই এই মুহুর্তে দেশের সবচেয়ে বড় সংখ্যালঘু শ্রেনীর মানুষ। এদের মধ্যে বেশিরভাগই বাস করেন সিন্ধ জেলায়। পাকিস্তানের মুসলিমদের সঙ্গে ভাষা ও সংস্কৃতির মিল আছে হিন্দুদের।