Date : 2024-04-25

অন্যের বানান ভুল দেখে মজা করেন? গবেষণা বলছে আপনি মানোরোগের শিকার!….

ওয়েব ডেস্ক: সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে অসংখ্য গদ্য, পদ্যের ছড়াছড়ি। সাহিত্যচর্চা করতে গিয়ে অনেক সময়ই বানান নিয়ে বিরম্বনার শিকার হন নেটিজেনরা। বেশিরভাগ সময়ই সেই বানান ভুল ধরতে এগিয়ে আসেন “ব্যাকরণ পুলিশ”-রা। অনেকেরই ইচ্ছে করে কমেন্ট বক্সে গিয়ে বিদ্রুপ করে বানান ভুল ধরিয়ে দিতে। বিশেষজ্ঞরা কিন্তু অন্য কথা বলছেন। আপনারও যদি এই অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে অবিলম্বে তা বদল ফেলুন। কারণ, বিশেষজ্ঞদের মত, এই প্রবনতা মানুষের প্রতি সংকীর্ণ মনষ্কতার সৃষ্টি করে আপনার মধ্যে। অবশ্যই এই ধরনের প্রবনতা আপনাদের নির্বুদ্ধিতারও লক্ষণ।

“প্লস ওয়ান” পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে এমনই দাবি করেছেন একদল মার্কিন গবেষক। তাদের মত, ভুল সংশোধনের বিষয়টি যেমন কঠিন তেমন অন্যের ভুল ধরার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রবনতা ইতিবাচকতার থেকেও বেশি খারাপ প্রভাব ফেলে। ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের বিশেষজ্ঞ তথা গবেষকদলের প্রধান জুলিয়া বোলান্ড বলেন, একজন ব্যক্তি কোনও লেখা পড়ে কী অর্থ করবেন, তা তাঁর চরিত্রের বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরে। তিনি বলেন, ‘লেখকদের সম্পর্কে পাঠকরা সাধারণত যে ধরনের ভাবনা পোষণ করেন, এই গবেষণার সেটিই দেখা হয়েছে।’

২০১৬-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানানো হয়, অনলাইন দুনিয়ার আচরণ ক্রমশ মানুষের চারিত্রিক পরিবর্তন আনছে। নেটিজেনদের প্রবনতা ক্রমশ ট্রোলিং-এর দিকে চলে যাচ্ছে। কোনও ব্যক্তির সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ রাখার ধরন বা আচরণ থেকেই তাঁর চরিত্র ও ব্যক্তিত্বের বিষয়ে প্রকৃত ধারণা পাওয়া যায়। গবেষকরা ৮৩ জন ব্যক্তির মধ্যে একটি গবেষণা চালিয়ে বিষয়টি উপলদ্ধি করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আর্টিক্যালে ইচ্ছে করে কিছু বানান ভুল লিখে দেন তারা।

পড়া শেষ হলে আলাদা করে প্রত্যেককে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, লেখাটি পড়ে কার, কী মনে হয়েছে? এরপর প্রশ্ন করা হয়েছিল, লেখাটিতে কোনও ব্যাকরণগত ভুল বা বানান ভুল তাঁদের চোখে পড়েছে কিনা। অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৮০ শতাংশেরও বেশি এই প্রশ্নের উত্তরে হ্যাঁ বলেছেন, আবার কারও কারও নজরেই পড়েনি গঠনগত ওই ভুলগুলি। যাঁরা খেয়াল করেছেন, তাঁদের প্রশ্ন করা হয়েছিল, ওই ভুলগুলি কীভাবে তাঁদের পড়া বা বোঝার ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল?

অনেকেই খুঁতখুঁত করেছেন এই বিষয়টি নিয়ে। এভাবেই প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ হয়। গবেষকদের মতে যারা এই ধরনের ভুল নজরে আনেননি তারা সাধারণত বন্ধু সুলভ হয়। আর যাঁরা যে কোন বিষয়ে খুঁতখুঁতে হন তারা খুবই সংকীর্ণ মনষ্ক হন। তবে গবেষণায় খুঁতখুঁতে মানুষের সংখ্যাই বেশি উঠে এসেছে। কিছু ক্ষেত্রে একাকিত্বেও ভোগেন এই ধরনের মানুষ। বিশেষজ্ঞদের মত আপনি যদি এই ধরনের মানুষ হন তবে অবশ্যই এই অভ্যাস বর্জন করা উচিত।