ওয়েব ডেস্ক : হংকংয়ের সরকার-বিরোধী আন্দোলনকারীদের সমর্থনে আইন পাশ করেছে আমেরিকান কংগ্রেস। প্রতিবাদে “কড়া প্রতিবিধানে”র হুঁশিয়ারি দিল চিন। বলেছে, চিন-নিয়ন্ত্রিত এই শহরে নাক গলানোর প্রয়াস চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হবে। বুধবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কংগ্রেসে পাশ হওয়া প্রস্তাবে সই করে আইনে রূপান্তরিত করেন। বেজিংয়ের ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়ায় তিনি কর্ণপাত করেননি। আইন পাশ করে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট দুই দেশের মধ্যেকার ক্ষতিকর বাণিজ্য যুদ্ধে ইতি টানতে চেয়েছেন। মার্কিন বিশেষজ্ঞরা একে হংকং ডিল বলেও অভিহিত করছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মার্কিন কংগ্রেসের সমর্থনে হংকংয়ের প্রতিবাদকারীরা আপ্লুত। কংগ্রেসে পাশ হওয়া প্রস্তাবে প্রেসিডেন্ট সই করেছেন জানার পর হংকংয়ের হাজার হাজার প্রতিবাদী “থ্যাকংসগিভিং” সমাবেশে যোগ দেন।
আরও পড়ুন :দোকানদার ফেরৎ দেয়নি সাইকেল, পুলিশকে চিঠি দিল ১০ বছরের আবিন
ড্রাগন ব্রুস লি ও বিখ্যাত সিনেমা পরিচালক জন উ-র স্মৃতিধন্য হংকংয়ের প্রাণকেন্দ্রে আয়োজিত সমাবেশে বহু তরুণ-তরুণী আমেরিকার ‘স্টার স্প্যাংগল্ড ব্যানারে’ নিজেদের মুড়ে আনন্দ প্রকাশ করে। চিন-বিরোধী এমনই এক আন্দোলনকারীর নাম সানি চিয়াং। ২৩ বছর বয়স। তার মন্তব্য, “আমাদের সমর্থনে বিল পাশ করার জন্য আমেরিকান কংগ্রেস আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ। এই সমাবেশ আমাদের কৃতজ্ঞতারই বহিঃপ্রকাশ।” হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং সেনেট, ক্যাপিটল হিলের দুই কক্ষেই হংকং আন্দোলনের সমর্থনে কার্যত সর্বসম্মতিক্রমে আইন পাশ হয়েছে। হংকংয়ে যেসব চিনা ও স্থানীয় সরকারি অফিসার মানবাধিকার ভঙ্গ করেছেন তাঁদের বয়কট করার পাশাপাশি হংকংয়ের অনুকূলে বাণিজ্য শর্ত রক্ষিত হচ্ছে কি না, এই আমেরিকান আইন বাৎসরিকভাবে সেটাও খতিয়ে দেখবে। এছাড়া, হংকং পুলিশকে কিছু অস্ত্র রফতানিও বন্ধ করা হবে বলে এই নয়া আইনে জানানো হয়েছে। প্রাণঘাতী নয় এমন যেসব অস্ত্র আমেরিকা এতদিন হংকং পুলিশকে রফতানি করত, মানবাধিকার ভঙ্গ করে তার বেশ কয়েকটা প্রতিবাদকারীদের উপর ব্যবহার করা হয়েছে বলে মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে।
আরও পড়ুন :নিমিষা হয়েছে আইএসের ফতিমা, মা-কে জানাল এনআইএ
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর বিবৃতিতে বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট জি, চিন এবং হংকংবাসীর প্রতি শ্রদ্ধা থেকেই আমি এই বিলে সই করেছি। আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য, চিন এবং হংকংয়ের নেতৃবর্গ ও প্রতিনিধিরা সুসম্পর্ক বজায় রেখে বিরোধিতা মেটান। তাতেই দীর্ঘকাল শান্তি থাকবে, সমৃদ্ধিও হবে।” কিন্তু মার্কিন কংগ্রেস তথা প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপ চিনা নেতারা ভালো চোখে দেখেননি। চিনের উপ-বিদেশমন্ত্রী লি ইউচেং আমেরিকান রাষ্ট্রদূত টেরি ব্র্যানস্টাডকে বেজিংয়ে নিজের দফতরে ডেকে পাঠিয়ে বলেছেন, হংকংয়ের ব্যাপারে আমেরিকা যদি “স্বেচ্ছাচারীর মতো” আচরণ করে, তাহলে তার পরিণাম তাদেরই বহন করতে হবে। চিনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো আমেরিকা অবিলম্বে বন্ধ করুক। আমেরিকান কংগ্রেস এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের পর বেজিং কি পালটা চালের কথা ভাবছে? চিনের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র গেং শুয়াং কোনও মন্তব্য করেননি। শুধু বলেছেন, পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হয়। তার পর যা হওয়ার তা হবে।