ওয়েব ডেস্ক:- দেখলে মনে হবে আস্ত এক নরকঙ্কাল! হাত, পা, পাঁজরের সহ অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সবই প্রায় মানুষের মতো। মাথার খুলির দিকে তাকালে একটু অবাক লাগবে। মাথার খুলিটি ডিম্বাকার, যেন পিছনের দিকে ক্রমশ বেড়েছে। রাশিয়ার আরকাইমে একটি মহিলার নরকঙ্কাল উদ্ধার হওয়ার পর থেকে অনেক বিশেষজ্ঞের ধারনা এই কঙ্কাল মানুষের নয় বরং মানুষের মতো দেখতে এলিয়ানের! রাশিয়ার আরকাইম এমনিতেই একটি রহস্যময় স্থান। অনেকেই ওই স্থান থেকে ইউফো উড়ে যেতে দেখেছেন। অদ্ভুত সব আলোর ঝলক দেখা গেছে এই স্থানে। এই কঙ্কাল কি তবে এলিয়ানের? প্রত্নতাত্ত্বিকরা এলিয়ান তত্ত্ব মানতে অবশ্য নারাজ। এই নরকঙ্কালটির বয়স আনুমানিক ২০০০ বছর।
সরমতি নামের কোন প্রাচীন জনজাতির কোনও যোদ্ধা মহিলার কঙ্কাল এটি। সরমতিয়ানরা খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ থেকে ৪০০ অব্দ পর্যন্ত ইউক্রেন, কাজাখাস্তান ও দক্ষিণ রাশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিল। যেমন বিচিত্র ছিল তাদের জীবনযাত্রা তেমনি অদ্ভুত রীতি রেওয়াজ হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, প্রাচীন সরমতি জনজাতিতে ছিল না কোন লিঙ্গভেদ। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও শরীরচর্চা করত। এমনকি তারা যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করত। বলবৃদ্ধির জন্য শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ইচ্ছামতো পরিবর্তন করতেন।
জটিল এই জীবনযাত্রার মধ্যে মাথার করোটির আকারও পরিবর্তন করতেন এরা। এমনকি তারা নিজের শরীরের ডানস্তন পুড়িয়ে ফেলতেন।শিশু জন্মানোর পরেই মায়েরা সদ্যোজাতের মাথায় খুব কষে দড়ি বেঁধে দিতেন। তারপর মাথার একদিক টানটান করে সেই দড়ির পাক দেওয়া হত। প্রতিদিন ম্যাসাজ করতে করতে করোটির একপ্রান্ত লম্বা করার চেষ্টা চলত।
এই প্রক্রিয়া শুরু হত শিশু জন্মাবার কিছুদিনের মধ্যেই, করোটির হাড় শক্ত হওয়ার আগেই। ‘স্কাল মডিফিকেশন’-এর রেওয়াজ অবশ্য অনেক প্রাচীন জনজাতির মধ্যেই দেখা গেছে। মিশরের ফ্যারাওদের মধ্যেও এমন রীতি দেখা গেছে। পেরু, ফ্রান্স, আফ্রিকার কিছু অংশেও এমন লম্বাটে খুলির কঙ্কাল খুঁজে পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। এই ধরনের অঙ্গের পরিবর্তনের বেশিরভাগ করা হতো মহিলাদের উপর।