Date : 2024-03-29

সিংঘুতে আন্দোলনে অনড় কৃষকরা, মন ভেজাতে দীর্ঘ ব্যাখ্যা প্রধানমন্ত্রীর

তিন নয়া কেন্দ্রীয় কৃষি আইন তাদের সর্বস্বান্ত করবে। লাভের গুড় খেয়ে যাবে বহুজাতিক সংস্থাগুলি। এমনই আশঙ্কায় দিল্লি-হরিয়ানার সিংঘুতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন পঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা। তাতে সামিল হয়েছেন অন্যান্য রাজ্যের কৃষকরা। মাটি কামড়ে কৃষকদের সেই নাছোড় আন্দোলনের একটাই সুর, সংশোধন নয়, সম্পূর্ণ রূপে বাতিল করতে হবে তিন নয়া কৃষি আইন। কৃষকদের মূল আপত্তির জায়গা দুটো। প্রথমত তারা মান্ডি ব্যবস্থাতেই বেশি আস্থা রাখেন। দ্বিতীয়ত ফসলের ন্যূনতম দামের নিশ্চিন্ততা চান তাঁরা। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হলেও বরফ গলেনি। কৃষকদের বক্তব্য, ভুলিয়ে ভালিয়ে তাদের বিপদের মুখে ঠেলে দিতেই বেশি আগ্রহী সরকার। এমনই আবহে বড়দিনকে কৃষক মন ভেজানোর কাজে যথাসম্ভব ব্যবহার করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিনও ২৫ ডিসেম্বর। প্রতিবছর এই দিনটি সুশাসন দিবস হিসাবে পালন করে থাকে বিজেপি। এ বছর অনড় কৃষকদের জন্যই ব্যয় করতে উদ্যোগী হয় বিজেপি তথা সরকার। ২৫ ডিসেম্বর প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিন। প্রতি বছর এই দিনটিকে সুশাসন দিবস হিসাবে পালন করে থাকে বিজেপি। এ বছর তা ছাপিয়ে কৃষক মন ভেজাতেই উদ্যোগী হয় বিজেপি সরকার। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আলোচনায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র-সহ কয়েকটি রাজ্যের বাছাই করা কৃষকদের প্রশ্ন করেন প্রধানমন্ত্রী। জানতে চান নয়া কৃষি আইনের ফলে তাঁরা উপকৃত হয়েছেন কিনা। সংক্ষিপ্ত সেই প্রশ্নোত্তরে কৃষকদের বলতে শোনা যায় তাঁরা কীভাবে উপকৃত হচ্ছেন। বেশ কয়েকজন বলেন, তাঁরা ফসলের বেশি দাম পাচ্ছেন। বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তির ফলে তারা বেশি লাভ পাচ্ছেন। নয়া কৃষি আইনে আশঙ্কার কিছু নেই এমন একটি কথাই উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কৃষকদের কথোপকথনে। এরপর তাঁর দীর্ঘ বক্তৃতায় নয়া কৃষি আইনের সুফলগুলি ফের তুলে ধরার চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে আগামীদিনে কৃষকরা উপকৃত হবেন, লাভবান হবেন তাই বারবার তুলে ধরার চেষ্টা করেন। নিশানা করেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকেও। তাঁর বক্তব্য, রাজনৈতিক স্বার্থে কৃষকদের ভুল বোঝাচ্ছে কয়েকটি রাজনৈতিক দল। সমালোচনা করেন পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারেরও। দেশের সব রাজ্য পিএম কিসান সম্মান নিধি প্রকল্পের সুবিধা নিলেও রাজনৈতিক কারণে পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানান তিনি। এই পর্বেই পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, দেশের ৯ কোটি কৃষক পরিবারকে কিসান নিধি প্রকল্পের কিস্তি বাবদ ২ হাজার টাকা করে মোট ১৮ হাজার কোটি টাকা তুলে দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। যে টাকা সরাসরি উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। বিষয়টিকে স্বচ্ছতা ও প্রতিশ্রুতি রক্ষার সঙ্গেই তুলনা করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রশ্ন হল, এত কিছুর পরেও কি কৃষকরা তাঁদের আন্দোলন থেকে সরবেন। নাকি আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন তাঁরা ?