Date : 2024-04-25

আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলায় অস্বস্তিতে কেন্দ্র। আগামী সপ্তাহে রায়দানের সম্ভাবনা

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায় ,রিপোর্টার : রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত মুখ্যসচিবকে একদিন সময় না দিয়ে কেন মামলা স্থানান্তর প্রশ্ন হাইকোর্টের অবকাশকালিন বেঞ্চের।”কোনো হট রেস নয়”আপনার এত আর্জেন্সি কি ট্রান্সফারের জন্য? মাত্র একদিন সময় দিতে পারলেন না! ক্যাটের চেয়ারম্যান কিভাবে জানলেন সব ডকুমেন্ট দিল্লিতেই থাকবে। এটা ঠিক নয়, প্রশ্ন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের। আদৌ সঠিক ছিল কিনা চেয়ারম্যান এর সিদ্ধান্ত ২ নভেম্বর এর আগেই জানাবে হাইকোর্ট। কারণ ২ নভেম্বর আলাপন ব্যানার্জীকে কর্মিবর্গ বিভাগ নোটিশ দিয়ে বক্তব্য জানাতে তলব করেছে।

শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের তদন্তে কেন্দ্রের কর্মীবর্গ বিভাগে( DoPT) বিভাগের এক্তিয়ারকে চ্যালেঞ্জ করে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু আচমকাই সেই আর্জি শুনানি কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত করে ক্যাট। এই মামলা স্থানান্তরকে চ্যালেঞ্জ করে মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আলাপন বাবু।

বুধবার শুনানির গ্রহণ করেছিলেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন দ্বিতীয়ার্ধে সেই মামলার শুনানি হয়। তবে স্থগিত রইলো রায়দান।আগামী ২ নভেম্বর প্রিন্সিপাল বেঞ্চে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা। তার আগেই কলকাতা হাই কোর্ট রায় দেবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।

শুনানির শুরু থেকেই কেন্দ্রের আইনজীবী গৌরব বন্দ্যোপাধ্যায়কে আদালতের প্রশ্নবাণের মুখে পড়তে হয়। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, ”যশ পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি, তা নিয়ে আলাপনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ দায়ের করা, সবটাই এ রাজ্যকেন্দ্রিক।” তবে কেন সেই মামলার শুনানি দিল্লিতে পাঠানো হল, তা জানতে চান বিচারপতি। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় মামলাকারী, মামলার তড়িঘড়ি শুনানির দাবি তিনি জানাতেই পারেন। কিন্তু কেন্দ্র কেন তড়িঘড়ি এই মামলা শুনানির জন্য দিল্লিতে নিয়ে গেল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। তাঁর পর্যবেক্ষণ, “প্রকৃত ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।” সবমিলিয়ে কার্যত হাই কোর্টে নাস্তানাবুদ হয়েছেন কেন্দ্রের আইনজীবী।

ইয়াস বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে এসে ২৮ মে কলাইকুণ্ডায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। কেন্দ্রের তরফে তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইয়াস বিধ্বস্ত এলাকার ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরির কাজে ব্যস্ত বলে লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন আলাপন।যা নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত।

আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ দায়ের করে ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনেল ট্রেনিং। শুরু হয় তদন্ত। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিভাগ একজন আমলার বিরুদ্ধে এই তদন্ত করতে পারে না বলে দাবি করেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব। তিনি পালটা সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ হন। এবার তাঁর সেই আবেদন রাজ্যের বেঞ্চে শুনানির বদলে দিল্লির প্রিন্সিপাল বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয় সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল। কেন্দ্রীয় সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।