Date : 2024-03-29

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এর বিজ্ঞপ্তি নিয়ে বাজি বাজার নিয়ে দোলাচলে বাজি ব্যবসায়ী সংগঠন

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, রিপোর্টার : কালীপুজো এবং দেওয়ালির এক সপ্তাহও বাকি নেই, আসছে ছট পুজোও। এমতাবস্তায় এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট হল না বাজি ব্যবসায়ীরা পরিবেশবান্ধব বাজি বানানোর জন্য যে ধরনের হাতে কলমে শিক্ষা এবং তার স্বীকৃতি প্রয়োজন হয় তা তারা পাবেন কিভাবে। তাই তারাও যে পরিবেশবান্ধব বাজি বানাচ্ছেন তা জনসমক্ষে তুলে ধরবার জায়গা নেই। হাইকোর্ট যে নির্দেশ কার্যকর করেছে তা মেনে ইতিমধ্যেই চম্পাহাটি, হাড়াল, নুঙ্গি ও বজবজের বাজি উৎপাদক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ। সম্প্রতি সুইচ-অন ফাউন্ডেশন ও বেঙ্গল ক্লিন এয়ার নেটওয়ার্ক নামে পরিবেশকর্মীদের দু’টি সংস্থার সমীক্ষায় যে তথ্য উঠে এসেছে, তা কিন্তু খুব আশাপ্রদ নয়। পরিবেশ সংস্থা দু’টির তরফে জানানো হয়েছে, হাওড়া ও কলকাতার চিনাবাজারের মতো দু’টি জায়গার বাজি বিক্রেতা, নুঙ্গির বাজি প্রস্তুতকারক এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সব মিলিয়ে হাজারখানেক বাজি ব্যবহারকারীর মধ্যে চালানো হয়েছিল এই সমীক্ষা।

যাদের মধ্যে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল, তাদের ৩৫ শতাংশ গ্রিন-ক্র্যাকার-সহ সবরকম বাজি নিষিদ্ধ করার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। ৩০ শতাংশ মানুষ কোনও মতামত জানাননি। যেহেতু সমীক্ষার সময় সবরকম বাজি নিষিদ্ধ হয়নি, তাই বাজি পোড়ানো হলেও পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছ থেকে। তাতে ৬৯ শতাংশ মানুষ মনে করেছেন, বাজি পোড়ানোয় সরকার কোনও বিধি তৈরি করলে ভালো হয়। যে বাজি পোড়ালে শব্দ ও ধোঁয়া অনেক কম হয়, তা ব্যবহারের পক্ষে সওয়াল করেছেন তাঁরা। বাজি পোড়ানোর সময়সীমাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত, দেওয়ালিতে রাত ৮টা থেকে ১০টা এবং ক্রিসমাস ইভ ও নিউ ইয়ারে রাত পৌনে বারোটা থেকে সাড়ে বারোটা। ন্যাশনাল এনভায়র্নমেন্টাল এঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিট্যুট-নিরির(NEERI) পক্ষ থেকে আতসবাজি থেকে দূষণের পরিমাণ কমানোর জন্য পরিবেশবান্ধব বাজি গুলিতে বর্তমানে ব্যবহৃত রাসায়নিক গুলির ধরণ এবং পরিমাণ কিছুটা বদল আনা হয়েছে। এই নতুন ধরনের বাজি কিভাবে প্রস্তুত করা হবে তার জন্যে নাগপুরের নিরির থেকে ট্রেনিং নিতে হবে অনুমোদিত বাজি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি কে। এই ট্রেনিং শেষে দু’পক্ষের চুক্তির ভিত্তিতে বাজি প্রস্তুত করার অনুমোদন মিলবে নিরির থেকে, যা বাধ্যতামূলক। কিন্তু এ বছর নুঙ্গী বাজি ব্যবসায়ীদের অনুমোদন নবীকরণ করা হয়নি। তাই তারা কোন প্রকার ট্রেনিং নিতে পারেননি। ফলে বাধ্য হচ্ছে শিবাকাশিতে তৈরি বাজি বিক্রি করতে। আর এই সমস্যার কথা মাথায় রেখেই আজ নুঙ্গী বাজি বাজারে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের ডাক দেওয়া হয়েছিল প্রদেশ আতশবাজি ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে। উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক শুকদেব নস্কর ছাড়াও INTTUC র সভাপতি শক্তিপদ মন্ডল, প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য্য, কৃষ্ণেন্দু রায়, মোহনবাগানের প্রাক্তন ফুটবলার রাজিব ঘোষ সহ আরও বিশিষ্টজনেরা। প্রত্যেকেই তাদের ভাষণে আদালতের নির্দেশ কে মান্যতা দিয়ে বাজি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের সাহায্যার্থে যাতে বাজি তৈরিতে আরো সরলীকরণ করা যায় এবং তাদের অনুমোদন নতুন করে নবীকরণ করা হয় তার পক্ষে সওয়াল করেন।