Date : 2024-03-29

বাবার প্রতি মেয়ের কর্তব্যের গল্প

শাহিনা ইয়াসমিন, রিপোর্টার : প্রত্যেক বাবা-মার স্বপ্ন নিজের সন্তানকে সুষ্ঠভাবে মানুষ করা। এবং যথাযথ স্বীকৃতি দেওয়া। তেমনি সন্তানদেরও কর্তব্য বাবা-মার বাকি থেকে যাওয়া স্বপ্ন পূরণ করা। এমনি এক গল্প দেখা গেল যাদবপুর অঞ্চলে। উপার্জনহীন বাবাকে নিজের রোজগারে নতুন আলোর দিশা দেখিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছেন অভিনেত্রী বিনীতা গুহ।

লকডাউনে গতবছর কাজ হারিয়েছেন যাদবপুরের বাসিন্দা সুখেন গুহ। তাঁকে ভেঙে পড়তে দেননি মেয়ে বিনীতা গুহ। বরং বাবার হাতটাকে শক্ত করে ধরেছেন বিনীতা। সংসারের সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে বাবাকে চায়ের দোকান খুলে দিয়েছেন বিনীতা। তাঁর বাবার বরাবর একটা স্বপ্ন ছিল চায়ের দোকান খোলার। রূপালী পর্দার উপার্জন করা সামান্য রোজগার থেকে বাবার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেন মেয়ে বিনীতা। যাতে আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করতে পারেন ষাটোর্ধ্ব সুখেন গুহ। অভিনয় জগতের চাকচিক্যে হারিয়ে যাননি বিনীতা। আরপ্লাস নিউজকে দেওয়া তার সাক্ষাত্কারে বলেছেন- ” গ্ল্যামারের দুনিয়াতে থাকা সত্ত্বেও চা- দোকানির কন্যা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে অস্বস্তিবোধ করেন না বিনীতা গুহ “। তিনি পেশায় এক অভিনেত্রী। পড়াশোনার যাবতীয় খরচা নিজেই চালিয়েছেন। তিনি মনে করেন কোনও কাজই ছোটো নয়। তাই হাসিমুখে সব ধরণের কাজকে স্বাগত জানান বারাবর। অভিনয় জগতে আসার আগে বহু চাকরি করেছেন বিনীতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় বাবার চায়ের দোকানের ছবি পোস্ট করার পর এতটাই ভাইরাল হয়ে যাবে বলে মনে করেননি বিনীতা। সবার প্রশংসাও কুড়িয়েছেন বিনীতা। তবে চায়ের দোকানটি খোলার পিছনে সঞ্জয় গাঙ্গুলির অবদান রয়েছে এমনটাই জানান মেয়ে বিনীতা।

চায়ের দোকানে শুধু চা নয়, পাওয়া যায় ক্লাব কচুড়ি, মুড়ি-ঘুঘনি। সকাল 6টা থেকে সন্ধে 6টা পর্যন্ত দোকাল খোলা থাকে। দুর্গাপুজোর পঞ্চমী থেকে খোলা হয়েছে দোকানটি। যাদবপুরের শক্তিগড় মাঠের কাছে। বিনাতীর নিজস্ব একটা স্বপ্ন আছে। ভাড়া বাড়ি আর নয়, এবার নিজের একটা বাড়ি হবে। তবে এই স্বপ্নও একদমই নিজের জন্য নয়, বাবা-মার জন্য। বাবা-মাকে নিজের একটা বাড়ি দিতে চান বিনীতা। বাবা ও মেয়ের এই জুটির এই উদাহরণ সমাজের কাছে শিক্ষনীয় হয়ে থাকবে, তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।