Date : 2024-04-25

‘নয়াচরে’ নড়াচড়া। বুধবার যাচ্ছেন ছয় দফতরের আধিকারিকরা।

সঞ্জু সুর, রিপোর্টার : নতুন করে নয়াচর নিয়ে নড়াচড়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার। বুধবার মৎস দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব অত্রি ভট্টাচার্য সহ ছটি দফতরের আধিকারিকরা নয়াচর পরিদর্শনে যাচ্ছেন। প্রতিনিধিদলে থাকছেন শিল্প, ভূমি, পর্যটন, বিদ্যুৎ ও পরিবেশ দফতরের আধিকারিকরাও। পরিদর্শন শেষে তাঁরা প্রকল্পের বাস্তবতা নিয়ে রিপোর্ট দেবেন মুখ্যসচিবের কাছে। প্রসঙ্গত সোমবার নয়াচর নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। তারপর বুধবার সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নয়াচর পরিদর্শন। প্রসঙ্গত গত ১৮ নভেম্বর হাওড়া জেলার প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন নয়াচরে মৎস হাব ও ইকো ট্যুরিজম এর বিষয়ে কিছু করা যায় নাকি সেটা খতিয়ে দেখা হবে। তারপরেই আবার নতুন করে খবরে নয়াচর।


২০০৬ সালে ভোটে জেতার পর তৎকালীন বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে কেমিক্যাল হাব গঠনের কথা বলেন। শুরু হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেসের জমি বাঁচাও আন্দোলন। ২০০৮ সালের শেষের দিকে বাম সরকার নন্দীগ্রামের বদলে নয়াচরে এই কেমিক্যাল হাব গঠনের কথা জানায়। কিন্তু তখন বাধ সাদে ন্যাশনাল গ্রিণ বেঞ্চ। সেই থেকে নয়াচর প্রকল্প বিশ বাঁও জলে। ২০১৬ সালে বিশ্ববঙ্গ বানিজ্য সম্মেলন শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, “নয়াচরে পরিবেশ বান্ধব শিল্প গড়া হবে। ওখানে ১২ হাজার একর জমি কাজে লাগালে অনেক কর্মসংস্থান হবে।”
তারপরেও গত পাঁচ বছর বিষয়টি একটু পিছনের সারিতেই ছিলো। কিন্তু রাজ্যে তৃতীয় বার ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী পানাগড়ে একটি শিল্প সংস্থার অনুষ্ঠানে বলেন, “এবার তাঁর লক্ষ্য বাংলাকে আবার শিল্পে প্রথম স্থানে নিয়ে আসা।” ফলে রাজ্য সরকার ও বিভিন্ন শিল্প সম্ভাবনার বিষয় গুলি নতুন করে নেড়েচেড়ে দেখতে শুরু করে। এরমধ্যে শেষ মন্ত্রীসভার বৈঠকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিধায়ক তথা রাজ্যের মৎস মন্ত্রী অখিল গিরি প্রস্তাব দেন, নয়াচরে জায়গাটা পড়ে আছে। ওটা কাজে লাগানো দরকার। এদিন মন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, “ওখানে (নয়াচরে) প্রায় ৪,৬৬৩ হেক্টর জমি রয়েছে। বেশকিছু জলাশয় রয়েছে যার মোট আয়তন ১২.৫ হেক্টর। এখন অস্থায়ীভাবে হাজার দুয়েক মৎসজীবী ওখানে বসবাস করেন।” তিনি বলেন, “নয়াচরে যদি পরিবেশ বান্ধব শিল্প গড়ে তোলা যায় তাহলে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। পাশাপাশি ফিসারিজ কলেজ তৈরি করলে ও পরিবেশ বান্ধব পর্যটনের ব্যবস্থা করলে শুধু নয়াচর নয়, আশেপাশের এলাকার‌ও উন্নয়ন ঘটবে।”
এখন দেখার বিষয় হলো নয়াচর কি সত্যিই রাজ্যের শিল্পায়নে নতুন দিগন্ত খুলবে, নাকি আবার ফাইল বন্দী হয়ে পড়বে।