সঞ্জু সুর, রিপোর্টার : শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা বৈঠকে বসতে চলেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদি, স্বরাষ্ট্র সচিব বি পি গোপালিকা, কার্যনির্বাহী ডিজি মনোজ মালব্য সহ একঝাঁক ডিএম, এসপিদের সাথে। সাম্প্রতিক সময়ে বিএসএফের এলাকা বৃদ্ধির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে এই বৈঠক যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
গত ১১ অক্টোবর বিএসএফের এলাকা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র সরকার। মূলতঃ পশ্চিমবঙ্গ সহ কয়েকটি রাজ্যের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের কথা জানার পরেই তীব্র আপত্তি জানায় রাজ্য। রাজ্যের বক্তব্য, এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপের সামিল। আইনশৃঙ্খলা দেখা ও রক্ষা করার দ্বায়িত্ব রাজ্যের উপরেই ন্যস্ত করেছে সংবিধান। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত লাগু হলে তা ব্যহত হবে। এতদিন সীমান্তবর্তী প্রতিটি রাজ্যের ক্ষেত্রে বিএসএফের আওতাধীন এলাকা ছিল ১৫ কিলোমিটার। কিন্তু নতুন সিদ্ধান্তে তা একলাফে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করা হয়েছে। যার ফলে আমাদের রাজ্যের অনেকটা অংশই সরাসরি বিএসএফের আওতাধীন হয়ে যাবে। যাতে এইসব এলাকায় বিএসএফ যে কোনো ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ, আটক বা প্রয়োজনে গ্রেফতার পর্যন্ত করতে পারবে। এবং সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে কোনোরকম অবহিত করার প্রয়োজনীয়তা তাদের থাকবে না। এখানেই আপত্তি রাজ্যের। প্রসঙ্গত চলতি বিধানসভা অধিবেশনে বিএসএফের এই ক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে নিন্দা প্রস্তাব আনতে চলেছে শাসক দল। ফলে এমতাবস্থায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের এই বৈঠক যে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা-কে সরাসরিই নিজেদের আপত্তির কথা জানাবে রাজ্য। যদিও শুক্রবারের বৈঠকের আলোচ্যসূচি তে মূলত সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া লাগানো, নতুন চেকপোস্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে জমির সংস্থান করা, বর্ডার ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিষয় রয়েছ। তবে এইসব বিষয়ের থেকে বিএসএফের এলাকা বাড়ানোর বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য রাজ্যের দশটি জেলার প্রায় ২৪ হাজার কিলোমিটার সীমান্তবর্তী এলাকা রয়েছে। তার বেশিরভাগটাই যদিও বাংলাদেশ বর্ডার বাকি অংশটা নেপাল ও ভুটান । শুক্রবার এর এই বৈঠকে মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, ডিজি ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের সীমান্তবর্তী প্রতিটি জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপাররা। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিএসএফ সহ সেনা ও নৌবাহিনীর ইস্টার্ন জোনাল আধিকারিকদেরও।