Date : 2024-04-23

হারকর জিতনে ওয়ালো কো বাজিগর ক্যাহেতে হ্যায়! আজ সেই বাজিগরের জন্মদিন।

সায়ান্তিকা ব্যানার্জী, রিপোর্টার : ২ রা ননভেম্বর। তামাম ভারতবাসীর কাছে যেন এক উৎসবের দিন। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে পোস্টে ছয়লাপ। সেই ছেলেটা যে ভালোবাসতে শিখিয়েছিল, দু হাত বাড়িয়ে এক উষ্ণ আলিঙ্গনের আহবান জানিয়েছিল প্রেমিকাকে, সমস্ত ছেলেদের শিখিয়েছিল প্রেমিক হতে, ঝড় তুলেছিল মেয়েদের বুকে। যে ছেলেটা বারেবারে বুঝিয়েছিল সবসময় হার মানে হেরে যাওয়া নয় কারণ হারকর জিতনে ওয়ালো কো বাজিগর ক্যাহেতে হ্যায়! আজ সেই বাদশার জন্মদিন। আজ শাহরুখ খানের জন্মদিন।

শাহরুখ- এমন একটা নাম যাকে নিয়ে আলাদা করে আর বলার কিচ্ছু নেই। আসলে শাহরুখ মানেই প্রেম। গালে টোল পড়া ছেলেটা যখন পিয়ানো বাজিয়ে গেয়ে ওঠে বাস ইতনা সা খোয়াব হ্যায়- মেয়েরা যে আচ্ছন্ন হয়নি কিংবা এত দিন বাদেও আচ্ছন্ন হয় না এমন দোষ কিন্তু মোটেও দেওয়া যাবে না। কিংবা ডিডিএলযে! ইউরোপের এক চার্চে নায়িকা প্রার্থনা করছে, আমাদের ম্যাজিশিয়ন তাকে এক ভাবে দেখছে আর ঝুপ করে প্রেম উকি দেয়, আর প্রার্থনা না করতে পারা ছেলেটাও কখন যেন তার সিমরনের জন্য চেয়ে নেয় এক আকাশ খুশি সব আকাঙ্খার পরিপূর্ণতা, কিংবা দেবদাস- শাহরুখই তো শিখিয়েছেন আমাদের হাত ধরে, ভালোবাসলে ডুবে যাও, নিজের মধ্যে লালন করো তাকে! সিনেমার শেষ দৃশ্যে তার পারো ছুটে আসছে আর জীবন দীপটা আস্তে আস্তে নিভে আসছে, আর টিভির সামনে বসে থাকা প্রতিটি দর্শককে চোখের চাহনি দিয়ে কাঁদিয়ে দিতে পারেন যিনি- তার জন্মদিন একটা ফেস্টিভ্যালের সমান হবে না তো কার হবে!

৩০ বছর আগে কে ভেবেছিল এই ছেলেটা একদিন বিশ্ব শাসন করবে। তার হাতে থাকা অদৃশ্য ম্যাজিক স্টিক দিয়ে সে কখনো আমাদের ফ্রিজ করবে কখনো রিলিজ আর আসমুদ্রহিমাচল বুদ হয়ে থাকবে একটা যুগের ধারক বাহকের নামে! কেউ ভাবেনি শাহরুখ শুধু ভালোবাসা দিয়েই মাত করে দেবে সবকিছুকে! সেই ভালোবাসা যার মোহে কোন সদ্য টিন এজ তরুণী তার রাহুলের জন্য পয়সা বাঁচিয়ে টিফিন কেনে, সেই ভালোবাসা যার ছত্রছায়ায় এসে কোন রাগী বাবা, সিমরনের বাবার মতই তার মেয়েকে এগিয়ে দেবেন তার ভালোবাসার দিকে, বলবেন যা সিমরন জিলে আপনি জিন্দেগী! কিংবা সেই ম্যাজিকাল লাভ যার জন্য একটা তুমুল ভুল করেও কোন প্রেমিক তার প্রেমিকাকে বলবে বড়ে বড়ে দেশো মে এয়সি ছোটে ছোটে বাত হোতি র‍্যহেতি হ্যায়। হ্যাঁ শুরুর শাহরুখের কাছে ছিল না কিছুই ভালোবাসা ছাড়া। আজও সেই সম্পদ নিয়েই তিনি ধনকুবের!

যারা নাইন্টিজের প্রজন্ম তাদের সবটুকু জুড়েই শাহরুখ। সে লুকিয়ে দেখা মহব্বতের হামকো হামিসে চুরালোই হোক বা মেলা থেকে কেনা খেলনা মোবাইলে বোতাম টিপে বারবার শোনা চল ছাইয়া ছাইয়া, কিংবা বড় হয়ে এসআরকের মত প্রেমিক চাওয়া- হ্যাঁ শাহরুখ সেই মানুষটা যার প্রভাব সকলের জীবন জুড়ে

শুধু পর্দার প্রেমিকই নয়। বাস্তবেও এসআরকে এক আদর্শ স্বামী এক আদর্শ প্রেমিক। আচমকা শুরু হওয়া একটা সম্পর্ক, গৌরিকে বরাবর ভীষণ ভালোবাসতেন তিনি। একটা ছোট ভূল বোঝাবুঝির কারনে আলাদা হয়ে যাওয়া দুজনের অনেক খুঁজে গৌরির সন্ধান পেয়ে ছুটে যাওয়া সেখানে একটা নিবিড় জড়িয়ে ধরায় বুঝিয়ে দেওয়া যতদূর যায় চোখ পাশে আছি আমি তোমার। আর তারপর সারা বিশ্বের প্রেমিক হয়ে ওঠার পরেও দিনশেষে আজও শাহরুখ শুধু গৌরির।

আসলে শাহরুখ একটা মারাত্মক ইন্সপিরেশন। শুন্য থেকে শুরু করা ছেলেটা যেভাবে শুধু অভিনয় দিয়ে শাসন করেছে গোটা বিশ্বকে তা ইন্সপিরেশন ছাড়া আর কি হবে! একটা মানুষ ঠিক কতটা সফল হলে কত মানুষ মুম্বই যায় শুধু মন্নতের সামনে একবার যাবে বলে। মন্নত মুম্বইয়ের সবচেয়ে দামী বাড়ি- যার সামনে লেখা ল্যাণ্ডস এণ্ড! হ্যাঁ সত্যিই মন্নতের বাসিন্দা যিনি তিনি আমাদের জন্য ভগবান। একটা মানুষ ঠিক কতটা সফল হলে তার জন্মদিনে ভিড় জমে যায় তাকে একবার দেখতে। অপেক্ষা চলে কখন ভগবান সেই মারাত্মক পোজ নিয়ে একবার দেখা দেবেন। এসআরকে আমাদের জন্য সেই দৃড়তা যাকে স্টেডিয়ামে ঢোকার প্রবেশাধিকার না দিলেও নতুন উদ্যমে ফিরে আসেন তিনি। আর রইল সমালোচনা! নাহ আজ বরং ওসব থাক। আমরা জানি ওসব আপনার ক্যারিশ্মার কাছে তুচ্ছ। কিংবা আপনার মত করে বলতে গেলে বড়ি বড়ি দেশো মে এয়সি ছোটে ছোটে বাত হোতি র‍্যহেতি হ্যায়।