Date : 2024-04-20

ধর্ষিতা নাবালিকার গর্ভপাত চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ বিধ্বস্ত বাবা-মা।বিশেষজ্ঞ কমিটির অনুমোদন মিললেই হবে গর্ভপাত : হাইকোর্ট

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়,রিপোর্টার: পরিবারের নতুন সদস্য আসছে,এই সংবাদ এলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন বাবা মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্য রা। কিন্ত এক্ষেত্রে পরিবারে নতুন সদস্য আসার সংবাদ যে পরিবারের কাছে অভিশাপ।তাই হাই কোর্টের দ্বারস্থ বাবা-মা। ৩রা জানুয়ারি নাবালিকার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে রিপোর্ট আদালতে উপস্থিত করতে হবে বিশেষজ্ঞ কমিটিকে। তার উপর সিদ্ধান্ত নেবেন হাইকোর্ট।

মামলার বয়ান অনুযায়ী বালি নিশ্চিন্দার বাসিন্দা প্রণয় তালুকদার (নাম পরিবর্তিত) ও তাঁর স্ত্রী চন্দা তালুকদারের (নাম পরিবর্তিত)একমাত্র কন্যা সোনাইকে নিয়ে বসবাস করতেন।দারিদ্রতার সাথেই ছিল তাঁদের জীবনযাপন।প্রণয়বাবু পেশায় রাজমিস্ত্রি। এবং স্ত্রী পরিচারিকার কাজ করেন। তালুকদার পরিবারের অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা মুন্না ধানুকা তাঁর ১৭বছরের নাবালিকা কন্যাকে নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। এরপর চলতি বছরের ১৩ই সেপ্টেম্বর হাওড়া বালি নিশ্চিন্দা থানায় তালুকদার পরিবার মুন্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। শুরু হয় পুলিশি তদন্ত। উত্তর প্রদেশের লক্ষ্মৌয়ের অম্বর হোটেল থেকে নাবালিকাকে উদ্ধার করেন পুলিশ।
১৬ই নভেম্বর ২০২১ সালে হাওড়া আদালতে মুন্না এবং সোনাই দুজনকেই পেশ করা হয়। মুন্নাকে নিম্ন আদালতে পক্ষ থেকে জেল হেফাজতে পাঠালেও নাবালিকা সোনাইকে হোমে পাঠানো হয়। অভিযোগ মুন্না তাঁর সাথে বার বার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। অভিযুক্ত ৪৫বছরের মুন্না বিবাহিত তাঁর সন্তানও রয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করেছে।
এই মধ্যেই ওই নাবালিকার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা যায় সে গর্ভবতী। মেয়ে গর্ভবতী শুনে তালুকদার দম্পতির মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। নিরুপায় বাবা-মা আদালতে র দ্বারস্থ হন।
তালুকদার পরিবারের আইনজীবী দেব কুমার শর্মা জানান সংবিধানের ২১ নম্বর ধারা অনুযায়ী নাবালিকা ও তাঁর পরিবারের অধিকার রয়েছে গর্ভস্থ সন্তান রাখবেন কি রাখবেন না তা তাঁরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। নিম্ন আদালতে আবেদন জানিয়েও কোন সুরাহা হয় নি। নাবালিকার গর্ভপাত না হলে ভবিষ্যতে তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা পরিবারের সদস্যদের। আইনজীবী শর্মা আর জানান বর্তমানে ওই নাবালিকার ২২ সপ্তাহের গর্ভবতী।
চলতি বছরের ১২ই অক্টোবর গর্ভপাত সংক্রান্ত সংশোধন আইনে বলা আছে আদালতের নির্দেশে তিন দিনের মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কমিটি রিপোর্ট দেবেন সেই কমিটির অনুমোদন পেলে ৫ দিনের মধ্যে গর্ভপাত করাতে পারবেন। তাই আইনজীবীর দাবি ইতিমধ্যে নাবালিকাকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিচার করুক আদালত।
বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা নির্দেশ দেন হাওড়া জেলা হাসপাতালে সুপারকে অবিলম্বে প্রসূতি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে ওই নাবালিকার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে আগামী ৩রা জানুয়ারির মধ্যে। নাবালিকার গর্ভপাত করা যাবে কিনা তাও রিপোর্টে উল্লেখ রাখতে হবে।
রিপোর্ট হাতে আসার পরই আদালত গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত নেবেন।