Date : 2024-04-26

মায়ের ওপরে অত্যাচার বরদাস্ত করবে না হাইকোর্ট।বাড়িতে মোতায়ন করা হলো মহিলা কনেস্টবল

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, রিপোর্টার: আবেদনকারী বাঁকুড়ার বাসিন্দা শেফালী দত্ত। তার ৩ মেয়ে ও ২ ছেলে। ছোট মেয়ে জয়ন্তী দত্তর মৃত্যুর পরেই শুরু হয় অশান্তি। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই শেফালী দেবীর দেখাশোনা করেন তার বড়ো ছেলে। ২০১৭ সালের ৭ জুন প্রথমে শেফালী দেবী বাঁকুড়া থানায় ছোট ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগে ছোট মেয়ের মৃত্যুর জন্য ছোট ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন শেফালী দেবী। এরপর থেকেই ছোট ছেলে ও বউ তার ওপর অত্যাচার শুরু করেন বলে অভিযোগ। এমনকি তাকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। বাধ্য হয়ে ১৯ জুন আসানসোলে মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন শেফালী দত্ত। এরপর চলতি বছরের ৬ জুন ও ১জুলাই বাঁকুড়া থানায় ২ টি অভিযোগ দায়ের করেন শেফালী দেবী। কোনও কাজ না হওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শেফালী দেবী।
চলতি বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিচারপতি রাজশেখর মান্থা পুলিশকে নির্দেশ দেন শেফালী দেবীকে বাড়িতে ঢুকিয়ে দিতে হবে। ৩ দিন বাড়ির সামনে পুলিশি প্রহরা থাকবে। সেই মত ২৮ নভেম্বর পুলিশ শেফালী দেবীকে বাড়িতে ঢুকিয়ে দেয়।
৩ দিন পর পুলিশি প্রহরা উঠে গেলে ফের ছোট ছেলে ও বউ শেফালী দেবীর ওপর অত্যাচার শুরু করেন বলে অভিযোগ। ১০ জানুয়ারি ফের বাঁকুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শেফালী দেবী। পুনরায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।

শেফালী দেবীর আইনজীবী সৌগত মিত্র বলেন হাইকোর্টের নির্দেশ সত্তেও ছোট ছেলে ও ছেলের বউ ক্রমশ তার ওপরে অত্যাচার করছে।
সরকারি আইনজীবী অমৃতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে জানান পুলিশ অভিযোগ পাওয়া মাত্রই শেফালী দেবীর বাড়িতে যায় কিন্তু তাকে ওই বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
শেফালী দেবীর আইনজীবী সৌগত মিত্র :— পুলিশ যে সময় ছিলেন সেই সময় তিনি একটি পারিবারিক বিবাহ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন।
ছোট ছেলের আইনজীবী জানান আমি কোনোভাবেই মায়ের উপর অত্যাচার করি না এই অভিযোগ সাজানো। ওই সম্পত্তির কিছু অংশ নিয়ে আমি বসবাস করি।
বিচারপতি রাজশেখর মান্থা :— মায়ের ওপরে এই অত্যাচার কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। অবিলম্বে আপনার ক্লায়েন্টকে বলুন এই ধরনের মানসিক বা শারীরিক অত্যাচার বন্ধ করতে। না হলে আদালত উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বাঁকুড়া থানা পুলিশকে এক মাসের জন্য শেফালী দেবীর বাড়ির বাইরে একজন মহিলা কনস্টেবল নিয়োগ করতে হবে। যদি ছোট পুত্র ও তার বউ ফের শেফালী দেবীর অপর কোনও ভাবে অত্যাচার করে তৎক্ষণাৎ শেফালী দেবী ওই মহিলা কনস্টেবলের সাহায্য নেবেন। এই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে মহিলা কনস্টেবল বাড়ির ভেতরে ঢুকে যাতে শেফালী দেবী শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করতে পারেন তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। পুলিশি খরচ সম্পূর্ণভাবে বহন করবে ছোট ছেলে ও তার বউ। বাঁকুড়া থানার পুলিশকে নির্দেশ তার কাছ থেকেই পুলিশি খরচ গ্রহণ করবে তারা। যদি ছোট ছেলে ও বৌ সেই পুলিশি খরচ না দেয় তাহলে রাজ্য সরকার পুনরায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবে। আদালত তখন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।