Date : 2024-04-20

আগামী বছর চ্যালেঞ্জের সামনে বিশ্ব অর্থনীতি

পৌষালী সেনগুপ্ত নিউজ ডেস্কঃ করোনার নয়া রূপ ওমিক্রন নিয়ে তোলপাড় বিশ্ব। আগের রূপগুলির তুলনায় ওমিক্রন রূপ যে আরও বেশি ছোঁয়াচে তা প্রাথমিক ভাবে বোঝা গিয়েছে। কিন্তু তার মারণ ক্ষমতা কি ডেল্টার চেয়েও বেশি? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। এ দিকে নতুন বছর দোরগোড়ায়। সেখানে বিশ্ব অর্থনীতির সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উঠে আসছে যে বিষয়গুলো, তার মধ্যে গুরুত্বের বিচারে প্রথম পাঁচেই থাকবে করোনা বা ওমিক্রন আতঙ্ক।

এখন প্রশ্ন হল, গত দু’বছর অতিমারির দাপটে অবসন্ন থাকার পর ২০২২-এ কি মুখ তুলে চাইবে দুনিয়ার অর্থনীতি?অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সামগ্রিক ভাবে তিন বিষয়ের উপরই নির্ভর করছে আগামী অর্থনীতির ভালমন্দ।তা হল নতুন বছরে কি অতিমারি থেকে পাকাপাকি মুক্তি মিলতে চলেছে? চিনের অর্থনৈতিক গতিপথ আরও কতটা সমস্যার হবে? বিশ্বব্যাপী মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা কি আরও নিম্নগামী হবে, আকাশ ছোঁবে মুদ্রাস্ফীতি? বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওমিক্রন মোকাবিলার যেটি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে আছে, তা হল, লকডাউন।আর লকডাউন মানে অর্থনীতিতে সরাসরি আঘাত।

২০২২-এ কি তেমনই পরিস্থিতি আবার ফিরে আসবে? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এখন এটাই। জিনিসপত্র এবং পরিষেবার অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জেরে মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস। সাধারণ পরিভাষায় একেই বলে মুদ্রাস্ফীতি। বিশ্ব জুড়ে অর্থের ক্রয়ক্ষমতা কমার অর্থ, প্রান্তিক ও গরিব জনসংখ্যার উপর অতিরিক্ত চাপ। কারণ নিম্নগামী আয়ে টাকার ক্রয়ক্ষমতা কমলে বাড়তি চাপে পড়ে অর্থনীতি, কমে বিস্তার। কোভিড ও অন্যান্য বিভিন্ন কারণে গত দু’বছর ধরে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে ভাটার টান, তারই ফলশ্রুতি মুদ্রাস্ফীতির ক্রমাগত বৃদ্ধি।তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, আমেরিকা ২০২১ শেষ করবে ২ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে দিয়ে। কিন্তু বাস্তব বলছে, সেই হার গিয়েছে ঠেকেছে ৭ শতাংশে। ২০২২ সালেও এমনই কিছু কি অপেক্ষা করছে?এ ছাড়াও নজর রাখার মতো বিষয়, রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কটের দিকেও। রাজনৈতিক সঙ্কট বাড়লে গ্যাসের দাম বাড়ার সমূহ সম্ভাবনা। জ্বালানির দাম বাড়লে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে মানুষের পকেটে।অর্থনীতিবিদদের আশা, ২০২২ সালে রসদের ঘাটতি পূরণ হবে।করোনা অতিমারি সরাসরি প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। সেই অভিঘাত এড়াতে পারেনি চিনও।মূলত এই তিন বিষয় ছাড়াও বিশ্ব অর্থনীতির ভালমন্দ নির্ভর করবে আরও কতগুলি রাজনৈতিক বিষয়ের উপর। ব্রেক্সিট থেকে শুরু করে কোভিড উত্তর দুনিয়ার রাজস্ব নীতি, বিভিন্ন দেশে খাদ্য সঙ্কটের জেরে উদ্ভুত অশান্তি, গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি, নির্বাচন— সব মিলিয়ে ভাল কিছু সঙ্কেত থাকলেও, আগামী বছর বিশ্ব অর্থনীতির সামনে চ্যালেঞ্জও কম নয়।