শাহিনা ইয়াসমিন, রিপোর্টার : যীশু খ্রীষ্টের জন্মের কয়েক হাজার বছর আগে থেকেই ঘোড়া মানুষের সঙ্গী। যদিও ভারতবর্ষে তার আগমন বৈদিক যুগে। তবে, শুরু থেকেই এই সঙ্গীর প্রতি নির্মম ব্যবহারে অভ্যস্ত মানুষ। পৃথিবীর পশ্চিমভূখন্ডে ঘোড়া হত্যা করে প্রাচীন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রচলিত ছিল। ভারতে বৈদিক যুগে ও পরবর্তীকালে অশ্বমেধ য়জ্ঞের প্রচলন ছিল। বলা যায় প্রাচীন রীতি আচার বিদায় নিলেও এই প্রাণীর প্রতি মানুষের নির্মমতা আজও বহমান। সম্প্রতি এরকমই এক নির্মম ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে পিপল ফর দ্য এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অফ অ্যানিম্যালস ও কেপ ফাউন্ডেশন।
প্রায়ই অপুষ্ট, তৃষ্ণার্ত এবং আহত ঘোড়াগুলিকে গাড়িতে করে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়ার জন্য বাধ্য করা হয়। যা নিষ্ঠুর ও বিপদজনক। প্রাণী আমাদের বিনোদনে ব্যবহার করার জন্য নয়। এমনই এক নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটে গেল কলকাতার বুকে। একটি বিবাহ অনুষ্ঠানে পায়ে গুরুতর ক্ষত থাকা একটি ঘোড়া ব্যবহার করা হয়েছিল। ঘোড়ার পায়ের ক্ষত চুনের প্রলেপ দিয়ে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল, বলে অভিযোগ। এই নির্মমতায় ঘোড়াটি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।
এই অমানবিক আচরণের অভিযোগে পিপল ফর দ্য এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অফ অ্যানিম্যালস (পেটা) ইন্ডিয়া এবং কেপ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ঘোড়া গাড়ির মালিক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ ওই ঘোড়ার মালিক এবং ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে অসুস্থ ঘোড়া ব্যবহার করার অভিযোগে এফআইআর নথিভুক্ত করেছে। এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে যেসব ধারায় সেগুলি হল ধারা ৩,১১(১)(এ), ধারা ১১(১)(বি), এবং ধারা ১১ (১)(এইচ)। দ্য প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েল্টি টু অ্যানিম্যালস(পিসিএ)অ্যাক্ট ১৯৬০ এর সেকশন ২৮৯-এর অধীনে। ঘোড়াটি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাওয়ায় এফআইআরে পিসিএ আইন, ১৯৬০এর ধারা ১১(১)(বি) এবং আইপিসি,১৮৬০ এর ধারা ৩৪ এবং ২৮৯ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পেটা ইন্ডিয়া অ্যাডভোকেসি অফিসার সমিত রায়, তিনি জানান পিপল ফর দ্য এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অফ অ্যানিম্যালস( পেটা) ইন্ডিয়ার উদ্যোগেই ঘোড়ায় টানা গাড়ি ইতিমধ্যেই মুম্বাইয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তার কারন ঘোড়া যানবাহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে পারে না। পিপল ফর দ্য এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অফ অ্যানিম্যালস(পেটা) ইন্ডিয়ার দাবী কলকাতাতেও অবিলম্বে ঘোড়া গাড়ি বন্ধ করা হোক।