Date : 2024-04-19

বাকি পুরসভা নির্বাচনে কি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই? মামলার শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখলেন প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, রিপোর্টার:- রাজ্যের ১০৮ টি পুরসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং মাইক্রো অবজারভার, অবজারভার চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে বিজেপির করা জনস্বার্থ মামলার শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখলেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভারদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।
পাশাপাশি রাজ্যের সদ্য সমাপ্ত হওয়া চার পুরসভা নির্বাচন বাতিল সংক্রান্ত মামলায় সোমবার ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছেন এই মুহূর্তে এই মামলা র কোন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না।আগামী দিনে মামলাকারি নতুন করে আবেদনের ভিত্তিতে বেঞ্চ শুনবেন।

সোমবার মামলার শুনানিতে বিজেপির পক্ষের আইনজীবী “ভোটের দিনের বেআইনি কর্যাকলাপ এবং হিংসার যে সমস্ত অভিযোগ, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাজ ছিল মহাভারতের অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের মত”আইনজীবী পাটুয়ালিয়া বলেন ভোটের দিন হিংসা সংক্রান্ত বিপুল সংখ্যক অভিযোগ নিয়েও হলফনামায় মুখ বন্ধ রাখা হয়েছে।
শুধুমাত্র উল্লেখ করা হয়েছে যে নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে এবং ভোটের দিন ৭২% ভোট পড়েছে।
বিজেপি র পক্ষে আইনজীবী পটুয়ালিয়া সেন্ট্রাল প্যারা মিলিটারি ফোর্স মোতায়েন ছাড়া রাজ্যে কোনো শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
উদাহরণস্বরূপ, ১২ ফেব্রুয়ারীতে ব্যাপক সংবিধানের খমতাকে স্থগিত করেছেন।
যেহেতু কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশন, অবাধ ও নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য আদালত সর্বদা কমিশন-এর উপর আস্থা রেখেছিল।
কিন্তু নির্বাচনের দিনের ঘটনা প্রমাণ করে যে, আদালত তাদের ওপর যে আস্থা রেখেছেন, সে বিচার করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।
জনগণ ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে ভোট দিতে পারে নি।
এছাড়াও, বিপুল সংখ্যক পুরসভা যেগুলির নির্বাচন ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা । বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ক্ষমতাসীন দলগুলি নির্বাচনে জয়ী হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।এই ঐতিহ্য গণতন্ত্রের জন্য খুবই বিপজ্জনক।
প্রধান বিচারপতি বিজেপির আইনজীবী কে প্রশ্ন করেন ত্রিপুরার পুরভোটে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতাযেনের নির্দেশ ছাড়া অন্য কোনও নির্দেশনামা আছে, যে নির্দেশের প্রয়োগ করে হাইকোর্ট পুরভোটে কমিশনের যুক্তি উড়িয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ জারি করতে পারে।
পাটুয়ালিয়া জানান রাজ্য এবং কমিশন উভয়ই তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল সংবাদপত্র জাগো বাংলায় প্রকাশিত খবরটিকে উল্লেখ করেছে। যেটি হাস্যকর। রাজ্য এবং কমিশন উভয়ই যুক্তি দেখিয়েছে যে ৭২% ভোট পড়েছে এবং সেই পাঁচটি নাগরিক ভোট শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে৷ যেখানে জাতীয় সংবাদ মাধ্যম হিসেবে নির্বাচনের তারিখে ব্যাপক সহিংসতা প্রকাশ করেছে।আদালতের জাগো বাংলার খবরে ভরসা করা উচিত নয়।
নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র বলেন বহু জায়গায় বিজেপি তাদের মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। যেসব জায়গায় বিজেপির কেউ মনোনয়ন জমা দিতেই আসেইনি সেখানে কমিশন কি করবে? সেই ক্ষেত্রেও বিজেপি অভিযোগ করছে ভায়োলেন্স হয়েছে।আসন্ন ১০৮ টি পুরসভার নির্বাচনে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের প্রার্থনার বিরোধিতা করছি।রাজ্যের বাস্তব চিত্র আবেদনকারী তার আবেদনে তুলে ধরেছেন।আবেদনকারী শুধুমাত্র তাদের প্রার্থীদের উপর নির্ভর করে।
কমিশনের হলফনামায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে ৯ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টা পর্যন্ত যারা মনোনয়ন জমা দিতে এসেছেন, তাদের সবাইকে জমা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যারা নির্ধারিত সময়ের পরে এসেছেন তাদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
তাই ব্যক্তিদের মনোনয়ন দাখিল করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলছে। যার কোনও যৌক্তিকতা নেই।
প্রধান বিচারপতি কেন রাজ্য নির্বাচন কমিশন বিষয়টিকে এত হালকাভাবে নিচ্ছে।
নির্বাচনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না। আদালতের নির্দেশের পর বৈঠকের মিনিট থেকে পরিষ্কার। বৈঠকে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে কোনও আলোচনাই হয় নি। শুধুমাত্র প্রশাসনের মৌখিক আশ্বাসের ওপর ভিত্তি করেই নিরাপত্তার সিধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি কমিশনের উদ্দেশ্য বলেন মি: মিত্র আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে এখনই কোনও ধরণের পর্যবেক্ষকের প্রয়োজন নেই।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য চারটি পর্যায় ছিল।
পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হলে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
প্রথমে নির্বাচন কমিশন, তারপর রাজ্য প্রশাসন, পুলিশ কর্তৃপক্ষ এবং সর্বোপরি প্রার্থীরা ছিলেন।তাই কোনো ধরনের পর্যবেক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন নেই। সিসিটিভি বা অন্য রেজিস্ট্রার যে সংরক্ষণ করা আছে সেগুলো কাকে দিয়ে অডিট করানো হবে?
বিজেপির আইনজীবী পাটুয়ালিয়া আবেদনে বলেছেন, নির্বাচনের সমস্ত নথি যাচাইয়ের জন্য ভারতীয় নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হোক। তারাই বিষয়টা অডিট করুক।
কমিশনের পক্ষে আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র উত্তরে বলেন আমি এই দাবির বিরোধিতা করছি। আদালত নির্ধারণ করুক। কারণ এটা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নথি।
রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল বলেন নির্বাচন নিয়ে বিজেপি ছাড়া কোনও ব্যক্তিত্বর অভিযোগ নেই। সাধারণ মানুষের অভিযোগ নেই।
কেএমসি বডি নির্বাচন থেকে অন্য চারটি পুরসভার নির্বাচনে পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়নি। তাই ১০৮ টি পুরনির্বাচনে আধাসামরিক বাহিনীর প্রয়োজন নেই।
আবেদনকারীর আবেদনটি সম্পূর্ণরূপে আইনের প্রক্রিয়ার অপব্যবহার।
এজি আর জানায় আবেদনে ভুক্তভোগীদের সুনির্দিষ্ট নাম ছাড়াই অভিযোগ করা হছে। যাদের মনোনয়ন দাখিলে মারধর করা হয়েছে বা বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে,সবই মিথ্যা, ভিত্তিহীন। এই আবেদনের মাধ্যমে শুধুমাত্র নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটানোর প্রচেষ্টা করা হয়েছে।