Date : 2024-03-28

চলে গেলেন কোকিলকণ্ঠী লতা মঙ্গেশকর

চলে গেলেন কোকিলকণ্ঠী লতা মঙ্গেশকর। তিনি চলে গেলও তাঁর সৃষ্টিকে আঁকড়ে বেঁচে থাকবে ভারতের কৃষ্টি, সংস্কৃতি। মধ্যবিত্ত মারাঠী পরিবারে জন্ম নেওয়া হেমার লতা হয়ে ওঠার লড়াইয়ের পথ ছিল কন্টকময়। সারাজীবন পরিবারের ভালো চেয়ে আসা লতা নিজে বাঁচার জন্য আঁকড়ে ধরেছিলেন সুর, তাল লয়কে।

শিল্পী বেঁচে থাকেন তাঁর শিল্পসত্ত্বা নিয়ে। সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর সুরলোকে চলে গেলেও তিনি রয়ে যাবেন সুর সাধিকা হিসাবেই। লতা মঙ্গেসকরের সুরেলা কণ্ঠের কারণে জী্বন্ত সরস্বতী হিসাবেই পরিচিতি পেয়েছিলেন। বসন্ত পঞ্চমীতে তাঁর না ফেরার দেশে চলে যাওয়াকে অনেকেইবলছেন বাগদেবী তাঁর প্রিয় শিষ্যাকে যেন সঙ্গে নিলেন। লতা মঙ্গেসকর হওয়ার পিছনে রয়েছে এক দীর্ঘ লড়াই। যে লড়াইয়ে হেমা থেকে তিনি হয়ে উঠেছেন সকলের প্রিয় লতা তাই। মারাঠি মধ্যবিত্ত পরি্বারে জন্ম তাঁর। বাবা দীননাথ মঙ্গেসকর আদর করে মেয়েকে ডাকতেন লক্ষ্মী বলে তবে শৈশবে তাঁর নাম ছিল হেমা। পরে দীননাথ মঙ্গেসকর একটি নাটকের চরিত্র থেকে প্রভাবিত হয়ে 5 বছর বয়সে মেয়ের নাম রাখেন লতা মঙ্গেসকর। পাঁচ ভাইবোনের সংসারে অর্থাভাব ছিল চরম। তাই আর্থিক কারণেই তাঁকে প্রথম জীবনে অভিনয় করতে হয়েছিল। যা একে্বারেই পছন্দ হয়নি তাঁর। ১৩ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছিলেন লতা মঙ্গেসকর। নিজের পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের দায়িত্ব তুলে নেন কাঁধে। শুরু হয় তাঁর লড়াই।

সুরসম্রাজ্ঞী হয়ে ওঠার লড়াই

১৯৪২ সালে মারাঠি ছবিতে প্রথম লতার প্লে ব্যাক

১৯৪৫ সালে তিনি মুম্বই পাড়ি দেন

মুম্বইয়ে প্রথমবার মঞ্চে গান গেয়ে 25 টাকা উপার্জন করেন তিনি

গানকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরতে তিনি তালিম নিতে শুরু করেন

হিন্দুস্তানী শাস্ত্রীয় সংগীতে

প্রথম দিকে লতা মঙ্গেশকরের গান পছন্দ হয়নি অনেক পরিচালকের

প্রযোজক শশধর মুখোপাধ্যায়ও তাঁর সরু গলার কারণে তাঁকে খারিজ করে দেন

মজবুর ছবিতে গান গাওয়ার পর তাঁকে শুনতে হয়েছিল তিনি নুরজাহানকে নকল করেন

1949 সালে তাঁর গাওয়া আয়েগা আনেওয়ালা গান সাড়া ফেলে দেয়

এরপর আর তাঁকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি

প্রায় 36 টি ভাষায় তিনি 30 হাজার গান গেয়েছেন তিনি

পাঁচ ভাইবোন ও পরিারের দায়িত্ব কাঁধে থাকায় নিজের জন্য আলাদা করে ভাবা হয়নি তাঁর। বিয়ে করেননি তিনি। এই নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সহজ কথায় বলেছেন ভগবান সবার জন্য ভেবে রেখেছেন। শেষের বেশ কয়েকটা বছর সেই ভগবানের চরণেই নিজেকে সমর্পণ করেছিলেন শিল্পী।