Date : 2024-03-29

বিরোধীদের চাপে শাসকদলের প্রস্তাব গৃহীত হলো না কলকাতা হাইকোর্টে। কলকাতা হাইকোর্টে নজিরবিহীন ঘটনা বলেই মনে করছেন আইনজীবী মহলের একাংশ


ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, রিপোর্টার:– কলকাতা হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন ও বেঞ্চেরব মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে গিয়ে আইনজীবীদের মধ্যেই বিরোধ বেধে গেল। শুক্রবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত কলকাতা হাইকোর্ট চত্বর। কোর্টের বাইরে রীতিমতো উত্তেজনা পরিস্থিতি তৈরি হয়। বাকবিতণ্ডা বেঁধে গেছে আইনজীবীদের মধ্যে। চূড়ান্ত অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আদালত প্রাঙ্গনে।
তৃণমূল সমর্থিত আইনজীবীদের সঙ্গে তুমুল ঝামেলা চলছে কংগ্রেস, বাম ও বিজেপি সমর্থিত আইনজীবীদের। বিরোধীদের দাবি, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ায় বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস বয়কটের ডাক দিয়েছেন তৃণমূলের আইনজীবীরা। আর তা নিয়েই ধুন্ধুমার বেঁধে গেছে আদালত চত্বরে । যদিও তৃণমূলের আইনজীবীদের দাবি, আদালতে কোনওরকম বিশৃঙ্খলা তৈরি করেননি তাঁরা। আর এজলাস বয়কটের ডাক দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

শুক্রবার সকালে হাইকোর্টে শুনানি পর্ব সবে শুরু হওয়ার মুখেই অশান্তি বেঁধে যায়। একে একে এজলাসে আসেন বিচারপতিরা। ঠিক এই সময়ই আইনজীবীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পক্ষের দাবি, কয়েক জন বিচারপতির এজলাস বয়কট করতে চান বিপক্ষরা। অন্য পক্ষ বলে, বয়কট নয়, বার ও বেঞ্চের সুসম্পর্কের আবেদন করা হচ্ছে। আদালতের অখণ্ডতা বজায় রাখাই উদ্দেশ্য। কলকাতা হাইকোর্ট হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অরুণাভ ঘোষ বলেন, ”যে বিচারপতিরা মামলকারীর হয়ে বিপক্ষের প্রতিকূল রায় দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে বলা হচ্ছে। বিশেষ করে দু’জন বিচারপতির নাকি ওই আইনজীবীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। অথচ তাঁদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।” তিনি আরও বলেন, এজলাস বয়কটের সিদ্ধান্ত পাশ হয়নি। তৃণমূল সেলের আইনজীবীরা কাউকে কথা বলতে দেননি। মাইক কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। এই বিষয়ে হাইকোর্টের বিচারপতিকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বার অ্য়াসোসিয়েশনের সম্পাদক সুব্রত বসু বলেছেন, কোনও অ্যাজেন্ডা ছাড়াই এজলাস বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে। কী কারণে এজলাস বয়কট করা হবে তার কারণ সুস্পষ্ট নয়। কলকাতা হাইকোর্ট চত্বরে ঝামেলা হচ্ছে। টিএমসি সেলের আইনজীবী সঞ্জয় বর্ধনের বক্তব্য, এক শ্রেণির আইনজীবী ও বার অ্য়াসোসিয়েশনের দু’জন উচ্চ কর্তা এজলাস বয়কটের ভুল খবর রটাচ্ছে। আসলে বার অ্য়াসোসিয়েশনের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। বার ও বেঞ্চের মধ্যে সমন্বয় করাই উদ্দেশ্য। কোনও রাজনৈতিক স্বার্থে এই বৈঠক ডাকা হয়নি। আইনজীবী বলেছেন, ‘আদালত পবিত্র স্থান। আমাদের কাছেমন্দির-মসজিদ-গির্জা। আইনজীবীরা এখানকার পুরোবগিত।
আদালতের অখণ্ডতা-কর্মব্যস্থতা রাখতে চাই। আমরা কোর্ট বয়কট করছি না। বার ও বেঞ্চ সুসম্পর্ক রাখারই চেষ্টা হচ্ছে।’ প্রসঙ্গত ইদানীং কালে পুরভোট অথবা এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ । বিশেষ করে এসএসসি গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি ও সম্প্রতি নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের মামলায় সিবিআই-কে দিয়ে তদন্তের রায় দেন বিচারপতি। বিরোধী পক্ষের আইনজীবীদের দাবি, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ায় তৃণমূল সেলের আইনজীবীরা এজলাস বয়কটের ডাক দেয়। যদিও এই দাবি সত্যি নয় বলেই জানিয়েছে তৃণমূল সমর্থিত আইনজীবীদের সংগঠন।