Date : 2024-04-19

এ যেন অসুস্থ শরীরে রোজ দীঘা বা তালসারি ঘুরে আসা, এই মন্তব্য করে শিক্ষিকার বদলির আবেদন মঞ্জুর করল হাইকোর্ট

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক-“এ যেন রোজ দীঘা বা তালসারি ঘুরে আসা। একজন শিক্ষিকা অসুস্থ শরীরে রোজ ২৮৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করছেন এটা হতে পারে না।” এই মন্তব্য করে শিক্ষিকার বদলির আবেদন মঞ্জুর করল হাইকোর্ট।
বর্ধমানের সংস্কৃতের শিক্ষিকা স্নিগ্ধা দত্তর বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্কুলে পৌঁছে ক্লাস সেরে আবার রাতে বাড়ি ফিরে আসতে রোজ ২৮৪ কিলোমিটার পথ যাতায়াত করতে হয়। ২০১৮ সাল থেকে এভাবেই স্কুল চালিয়ে যাচ্ছেন চান্ডুলের বাসিন্দা স্নিগ্ধা দত্ত। হাওড়া উলুবেরিয়ায় জয়পুর সুরঙ্গময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে তিনি চাকরিরত । কিন্তু হঠাৎ তার শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় তার পক্ষের রোজ এতটা রাস্তা যাতায়াত করা সম্ভব হচ্ছিল না। চিকিৎসকদের পরামর্শ নিলে চিকিৎসকরা তাকে বলেন, নিত্য দিন এতটা যাতায়াত তার শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। এমনকি জীবনহানীর কারণে হতে পারে। চিকিৎসকদের বক্তব্য অনুযায়ী তিনি এবার বদলির আবেদন জানান। কিন্তু স্কুলের তরফ সে তাকে ন অবজেকশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি। চারবার আবেদন জানালেও তার আবেদন করেনি স্কুল। স্কুলের বক্তব্য ছিল, চাকরির মেয়াদ এখনো 5 বছর হয়নি। তাছাড়া সংস্কৃতে তিনি একমাত্র শিক্ষিকা। তাই তার বদলির আবেদন গৃহীত হয়নি। সবশেষে তিনি উপায় না দেখে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
বিষয়টি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে উঠলে বিচারপতি হাওড়া জেলা হাসপাতালে সুপারকে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে শিক্ষিকার শারীরিক পরীক্ষার নির্দেশ দেন। ১১ তারিখ হাসপাতাল সুপার রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে, প্রতিদিন স্নিগ্ধা দেবীর পক্ষে এতটা যাতায়াত জীবন হানির কারণ হতে। বুধবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে রিপোর্ট জমা পড়লে বিচারপতি শারীরিক সমস্যার বিষয়টি খতিয়ে দেখে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে স্কুলকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট ইস্যু করার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি জেলার স্কুল পরিদর্শক নিয়োগের স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিচারপতির নির্দেশ, ওই শিক্ষিকার আবেদন পাওয়ামাত্র তাকে তার পছন্দ করা বাড়ির কাছের স্কুলে নিয়োগ দিতে হবে।