নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক ঃ ক্রমেই ক্ষয়,হচ্ছে মাটির উর্বরতা। যা অত্যন্ত চিন্তার বলে মত পরিবেশবিদদের। তাই শুরু করা হয়েছে মাটি বাঁচাও অভিযান। রবিবার কলকাতার প্রিন্সেপঘাট থেকে একটি বাইক যাত্রার আয়োজন করা হয়। মাটি সংরক্ষণে মানব সচেতনতা বাড়াতে এই উদ্যোগ।
পৃথিবীর উপরিভাগের নরম আবরণই হল মাটি। প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে পাথর থেকে মাটির সৃষ্টি। কিন্তু সেই মাটিই সংকটময়। বর্তমানে ফসল উর্বর করতে, ফসল ক্ষতিকর জীবানুর হাত থেকে বাঁচাতে বিভিন্ন রকম কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। যা ক্রমে মাটির ক্ষতি করছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এই মাটির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদী সদগুরু। তাঁর মতে, উর্বর মাটির অভাব খুবই উদ্বেগের বিষয়। আর তাই ক্ষয়িষ্ণু মাটি এবং ক্রমবর্ধমান মরুকরণের দিকে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ‘সেভ সয়েল’ অর্থাৎ ‘মাটি বাঁচাও’ প্রচার শুরু করেছেন।
সদগুরু একটি মোটরসাইকেলে যুক্তরাজ্য থেকে ভারতে 30,000 কিলোমিটার যাত্রা শুরু করেছেন। তাঁর সমর্থনে রবিবার এক বাইক যাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। এদিন প্রিন্সেপ ঘাট থেকে সেই যাত্রার শুরু হয়। রবীন্দ্রসদন, পার্ক সার্কাস, শিয়ালদহ, শ্যামবাজার, ধর্মতলা হয়ে প্রিন্সেফ ঘাটে সেই যাত্রা পৌঁছায়। মাটি নিয়ে মানব সচেতনতা বাড়াতে কনশাস প্লানেটের উদ্যোগেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পরিবেশবিদ সদগুরু মতে যতই টাকা, শিক্ষা এবং অর্থ থাকুক না কেন, মাটি এবং জল সংরক্ষণ না করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভালভাবে বাঁচতে পারে না। তাই মাটির সংরক্ষণ করার বার্তা মানব জাতীর কাছে পৌঁছে দিতে বিশ্বব্যাপী বাইক যাত্রা শুরু করেছেন ।ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন টু কমব্যাট ডেজার্টফিকেশন (ইউএনসিসিডি) অনুসারে, 2050 সালের মধ্যে পৃথিবীর 90 শতাংশেরও বেশি মাটি ক্ষয়প্রাপ্ত হতে পারে।
মাটির ক্ষয় বিশ্বব্যাপী বিরাট সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। যেমন খাদ্য ও পানীয়র ঘাটতি, খরা ও দুর্ভিক্ষ, প্রতিকূল জলবায়ু পরিবর্তন হতে পারে। মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে পৃথিবীর এমন অনেক প্রজাতিও বিলুপ্ত হতে পারে। যার প্রভাব পড়বে মানব জীবনে। তাই এই ভয়ংকর পরিস্থিতির হাত থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করতে এখন থেকেই দরকার সচেতনতা। শুধুমাত্র বাইক যাত্রা নয়। রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে পড়ুয়াদের সচেতন করা হচ্ছে। বিভিন্ন রকম অ্যাক্টিভিটির মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সজাগ করা হচ্ছে। পাশাপাশি পড়ুয়াদের দিয়ে মাটি বাঁচাও বিষয়ভিত্তিক চিঠি সংগ্রহ করা হচ্ছে। যে চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ার থেকে প্রায় ১০ মিলিয়ন চিঠি সংগ্রহ করা হচ্ছে।যা পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। সরকার যাতে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেই তাই এই উদ্যোগ।