Date : 2024-03-29

রমজান মাসজুড়ে বড়বাজারে বিভিন্ন খাবারের পসরা সাজিয়ে বিক্রেতারা

শাহিনা ইয়াসমিন, সাংবাদিক:-পবিত্র রমজান মাসে একমাস রোজা রাখেন ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষ। রমজান মাসে নাখোদা মসজিদের কাছে রবীন্দ্র সরণিতে দেখা যায় হরেক রকমের খাবার। খেজুর, শিমাই ও বাকারখানির চাহিদা এখন তুঙ্গে। পসরা সাজিয়ে বিক্রিতে ব্যস্ত বিক্রেতারা।
রোজা খোলার সময় রোজাদাররা বিভিন্ন ধরণের ফল খেয়ে থাকেন। তার মধ্যে যে ফলটা খেয়ে রোজা খোলা হয় সেটি হল খেজুর। রমজান মাসে সারাদিন রোজা রেখে শরীর হয়ে পড়ে ক্লান্ত এবং দুর্বল৤ এই অবস্থায় শরীরে প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার। সেই পুষ্টিকর খাদ্য তালিকার প্রথম দিকেই রয়েছে খেজুর। প্রায় 15 ধরণের খেজুর পাওয়া যায়। চিকিতসকদের মতে খেজুর হল সর্বগুণ সম্পন্ন খাদ্য। দেশীয় খেজুর ছাড়া রয়েছে, আজওয়া, আম্বার, শাফাবি, ইরানি রুতওয়া, ওমানি, বারহি সহ বিভিন্ন ধরণের খেজুর। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে। এছাড়া সো়ডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন।
রবীন্দ্র সরণিতে নাখোদা মসজিদের কাছে এবং জাকারিয়া স্ট্রিটে রমজান মাসে বিভিন্ন রকমের খেজুরের পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। এই সব খেজুর আসে ইরান, আলজেরিয়া, আরব থেকে। বিদেশ থেকে যেসব খেজুর আমদানি করা হয় তার দাম প্রতি কেজি হাজার টাকা থেকে তিনহাজার টাকা পর্যন্ত। আবার দেশীয় খেজুর ৮০ টাকা কিলো থেকে ১০০ টাকা কিলো। খোলা খেজুরের পাশাপাশি প্যাকেট খেজুরও রয়েছে।


এত গেল খেজুর। এবার আসা যাক শিমাই বা শিমুই এবং লাচ্ছার দিকে। ইদের সময় শিমাই ও লাচ্ছা খাওয়া হয়ে থাকে। শিমাইকে চিনি, ঘি, ড্রাই ফল দিয়ে রান্না করা হয়। কিন্তু লাচ্ছাতে দুধ ও চিনি মেশালেই রেডি। বাগরি মার্কেটের উল্টোদিকে শিমাই ও লাচ্ছা থরে থরে সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। ১২ থেকে ১৫ ধরণের শিমাই হয়। তার মধ্যে কয়েক প্রকার শিমাই দেখা যায় বাজারে। বারাণসী, পটনা, লখনউ থেকে কলকাতার বাজারে আসে শিমাই। তবে লাচ্ছা এখানেই তৈরি হয়। শিমাইয়ের গুণমানের উপর নির্ভর করে দাম। শিমাইয়ের দাম প্রতি কেজি ১৪০ টাকা থেকে শুরু। ভালো গুণমানের শিমাইয়ের দাম ১৬০ টাকা কিলো। লাচ্ছার দাম প্রতি কেজি ১৫০ টাকা থেকে শুরু। শিমাইয়ের বাজার কেমন যাচ্ছে জিজ্ঞাসা করায় একাংশ ব্যবসায়ীদের মতে বাজার ভালো নেই।


যে খাবারটি সচারচর চোখে পড়ে না শুধু রমজান মাসেই দেখতে পাওয়া যায় সেটি হল বাকারখানি। শোনা যায় মুঘল আমলের এই খাবার আজও নিজ গুণে সম্পন্ন ও ততটাই প্রসিদ্ধ। বড়বাজার চত্বরে সেই খাবারের হদিশ পাওয়া গেল। কী এই বাকারখানি ? দুধ, ঘি, মাখন, মাওয়া, ময়দা, নারকেল দিয়ে তৈরি বিশেষ একপ্রকার রুটি। যা রমজানে মাসেই পাওয়া যায়
কলকাতাতে তিনধরণের বাকারখানি দেখা যায়। শাহি বাকারখানি, চান্দ্রাকালা ও ছোট বাকারখানি। শাহি বাকারখানির দাম ৮০ টাকা পিস। চান্দ্রাকালার দাম ৬০ টাকা পিস।


ছোট বাকারখানির দাম ২৫ টাকা পিস। মেটিয়াবুরুজ থেকে এই বাকারখানি আসে বড়বাজার এলাকায়।
কেউ বলছেন ব্যবসার বাজার খারাপ আবার কিছু ব্যবসায়ী বলছেন লকডাউনের পর এখন বাজার ভালো। বাজার যেমনই চলুক আশা ছাড়ছেন না বিক্রেতারা। কারণ এখনো রমজান মাস শেষ হতে দেরি আছে৤ ইদের আগে বাজার জমে উঠবে বলেই তাঁদের আশা।