Date : 2024-03-28

রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব এবার প্যাকেজিং শিল্পে

শাহিনা ইয়াসমিন, রিপোর্টার:- রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামার দিকে তাকিয়ে বিশ্ব। বিভিন্ন শিল্পের উপর এই যুদ্ধের প্রভাব কমবেশি পড়েছে। বাদ পড়েনি প্যাকেজিং শিল্পও। মিষ্টির দোকানে যে প্যাকেট ব্যবহার হয়, সেই প্যাকেট তৈরিতে লেগেছে ধাক্কা। বিদেশ থেকে আসা কাঁচামালের অভাবে প্যাকেজিং শিল্পের কাজ ব্যাহত হচ্ছে।


ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। এই যুদ্ধের প্রভাব থেকে বাদ যায়নি প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রি। মিষ্টির বাক্সের প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রে এর প্রভাব ভালোই পড়েছে। প্যাকেজিং এর জন্য যেটা দরকার তা হল পেপার বোর্ড। পেপার বোর্ড তৈরির জন্য যে কাঁচামাল দরকার হয় তার বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। যা যুদ্ধের কারণে জোগান কম হওয়ায় বাজারে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। পেপার বোর্ডের জন্য কাঁচামাল হিসাবে লাগে স্ক্রাব বা ছাঁট। যুদ্ধের কারণে বাজারে সেই ছাঁটের জোগানে সঙ্কট দেখা দিয়েছে।


আমেরিকা, ইংল্যান্ড, রাশিয়া, চিন থেকে ছাঁট আসে ভারতে। ছাঁট হল মূলত জঞ্জাল, যা বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। একটি মিলের ক্ষেত্রে প্রায় ৫০ থেকে ৭০ হাজার টন ছাঁট লাগে।
ভারতে ছাঁটের উত্পাদন কম হওয়ায় আমদানি করতে হয়। ছাঁটের জন্য মিলগুলোকে নির্ভর করতে হয় আমদানির উপর। ছাঁট বা জঞ্জালকে গলাতে হয়, তারপর তৈরি হয় বোর্ড।
বর্তমানে ভারতে বোর্ডের দাম প্রতি কেজি ১০০ টাকা। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে দাম ছিল প্রতি কেজি ৭০-৭২ টাকা। বোর্ড তৈরির ছাঁট অর্থাত্ কাঁচামালের দাম ছিল প্রতি কেজি ১২-১৩ টাকা।
এখন সেই দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি কেজি ২০ টাকা।


সামনেই পয়লা বৈশাখ ও অক্ষয় তৃতীয়া। উত্সবের এই সময়টায় মিষ্টির বিক্রি দ্বিগুণ হয়৤ করোনা বিধি শিথিল হওয়ায় এবার নববর্ষ আরও জমজমাট হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু অভাব দেখা দিয়েছে মিষ্টির বাক্সের। তবে দোকানের নাম সহ প্রিন্টেড বক্সের চাহিদা ভালোই রয়েছে। যা ছাপা ও কাটিং চলছে দোকানে। কিন্তু কাঁচামালের অভাবে বাক্স প্রস্তুতকারক থেকে শুরু করে বোর্ড কাটিং কর্মী সকলেরই ব্যবসা মন্দা।


কলকাতার নামকরা মিষ্টির দোকানগুলিতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০০-১০০০ পিস বাক্স লাগে। সেই তুলনায় অপেক্ষাকৃত ছোট মিষ্টির দোকানে ২০০ বাক্স লেগেই থাকে। মিষ্টির প্যাকেটে টান পড়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে মিষ্টি ব্যবসায়ীদেরও।
ওষুধ, খাদ্রদ্রব্য আ অন্য জিনিস, সব ক্ষেত্রেই প্যাকেজিং একটা আর্ট। যে কোনও জিনিস সুন্দর করে পরিবেশন করলে তবেই ক্রেতার মন টানে। রুশ আগ্রাসন পরোক্ষে আঘাত হেনেছে সেই প্যাকেজিং শিল্পেও। যুদ্ধের সেই অভিঘাত বইতে হচ্ছে বাংলার প্যাকেজিং ও মিষ্টান্ন শিল্পকেও।