Date : 2024-04-25

সাউথ সিটি-তে স্বাস্থ্য সাথী ! জমা পড়লো পাঁচশো আবেদন।

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : শুধু দক্ষিণ কলকাতাই নয়, সম্ভবত সারা রাজ্যের অন্যতম সবচেয়ে বড় অভিজাত আবাসন হল সাউথ সিটি। সমাজের হুজ হু-দের বাস এখানে। সেই আবাসনের আবাসিকরা আবেদন করেছিলেন স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের জন্য। শনিবার দুশো জনের হাতে তুলেও দেওয়া হলো এই কার্ড।

রাজ্যের মানুষের চিকিৎসা পরিষেবা সুনিশ্চিত করতে ও বেড়ে চলা চিকিৎসার খরচ থেকে তাদের মুক্তি দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৬ সালে চালু করেছিলেন ‘স্বাস্থ্য সাথী’ কার্ড। পরিবারের কোনো এক মহিলাকে প্রধান ধরে তাঁর নামেই পরিবারের কার্ড বরাদ্দ করা হয়। রাজ্যের সবাই ই এই কার্ড পাওয়ার যোগ্য। তবে মুলত আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা শ্রেনীর মানুষ‌ই এই কার্ড পাওয়ার জন্য বেশি আবেদন করেছেন এবং পেয়েছেন। এবার দেখা গেল শহর কলকাতার অন্যতম অভিজাত আবাসন ‘সাউথ সিটি’-র আবাসিকরাও এই কার্ড গ্রহণ করলেন। এই আবাসনে কমবেশি ১৪০০ টি ফ্ল্যাট রয়েছে। যার মধ্যে ৫০০ টি পরিবার স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলো। শনিবার সাউথ সিটি আবাসনে কলকাতা পুরসভার যৌথ উদ্যোগে একটি ক্যাম্পের মাধ্যমে তারমধ্যে ২০০ জনের হাতে কার্ড তুলে দিলেন স্থানীয় বিধায়ক দেবাশীষ কুমার।

যেখানে এত উচ্চবিত্তদের বাস, তারা এই কার্ডের জন্য কেন আবেদন করেছিলেন ? এই প্রশ্নের উত্তরে বিধায়ক তথা কলকাতা পুরসভা মেয়র পারিষদ দেবাশীষ বাবু বলেন,”এটা তো আমার ন্যায্য অধিকার। আমি কেন নেবো না ! আমরা হয়তো মনে করছি এরা আর্থিকভাবে ভালো আছেন। সেটা তারা থাকতেই পারেন। কিন্তু জ্বালানীর মূল্যবৃদ্ধি আজ যে জায়গায় গিয়েছে তার প্রভাব তো সাধারণ মানুষের উপরেই পড়ছে। আজ সারা ভারতবর্ষের কয়েকটি পরিবার ছাড়া সবাই আর্থিকভাবে চাপে রয়েছেন।”

এই বিষয়ে সাউথ সিটি আবাসনের বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের দেবাশীষ বসু-র মন্তব্য, “স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে আমরা অর্থনৈতিকভাবে কতটা উপকৃত হবো, মূলতঃ সেই জন্যেই আমাদের আবাসিকরা কার্ড নিতে চাইছেন, তা নয়। সরকার দ্বারা দেওয়া একটা আইডেন্টিটি, সেইটা আমাদের কাছে বেশি লোভনীয়‌। হয়তো আমরা একটা অভিজাত আবাসনের রয়েছি, কিন্তু আমরা তো সিস্টেম এর বাইরে নই সিস্টেমের অংশ, তার জন্য এই কার্ডটা আমাদের কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ।”

মূলতঃ যাঁর উদ্যোগে এই কার্ড দেওয়ার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিলো সেই স্থানীয় ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৌসুমী দাসের বক্তব্য‌ ও বেশ পরিস্কার। তাঁর মতে, “শুধুমাত্র গরিব মানুষই এই কার্ড পাবেন এমন কোন সীমারেখা মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করে দেন নি। কার্ড টা সবার জন্য। আইন যেমন সবার জন্য, পরিষেবাও তেমন সবার জন্য। তাই বিত্তশালী লোকেরা যদি এই পরিষেবা গ্রহণ করতে চায় তাহলে আমরা সেটা কোনভাবেই অস্বীকার করতে পারি না।”

উদ্দেশ্য মহৎ তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে বেসরকারি হাসপাতগুলো যেভাবে গড়িমসি করছে তা না আটকালে এই কার্ডের উদ্যেশ্য‌ই ব্যর্থ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।