Date : 2024-03-28

জিত-এ গেল ফুটপাথ। ফুটপাথে বসেই পড়াশোনা করে উচ্চমাধ্যমিকে ৮৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছে জিত দাস।

শাহিনা ইয়াসমিন, সাংবাদিক:- ফুটপাথও যে কারোর পরিচয় হতে পারে তা জিত দাসকে দেখে শেখা যায়। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত কেয়ার অফ ফুটপাথই তার কাছে বেঁচে থাকার ময়দান। সেই ফুটপাথে বসেই ৮৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন।
কালীঘাটের নকুলেশ্বর মন্দির। মন্দিরের উল্টোদিকে ফুটপাথ। ত্রিপল টাঙানো ফুটপাথে বাস কয়েকজনের। তাদের মধ্যে একজন জিত দাস। কালীঘাট হাইস্কুলের ছাত্র। প্লাস্টিকের ছাউনির তলায় পড়াশোনা করে ৮৩ শতাংশ নম্বর পেয়ে স্কুল ও পরিবারের নাম উজ্জ্বল করেছেন জিত। কলা বিভাগের ছাত্র জিত বরাবরই মেধাবী। উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলেই তা প্রমাণিত। কালীঘাটের ফুটপাথে বাবা, ঠাকুমা, পিসি ও ভাইয়ের সঙ্গে বাস জিতের।

মা কর্মসূত্রে বাইরে। প্রবল অভাবের সংসারে বড় হয়ে ওঠা জিতের। পরিচারিকার কাজ করে ঠাকুমা জিতকে মানুষ করেছেন। বাবা গাড়ি ধোয়া ও জোগাড়ের কাজ করে যে যতসামান্য টাকা পান তাতে জিতের পড়াশোনার খরচ ওঠে না। তাই স্কুলের শিক্ষক ও বন্ধুরা ওর পাশে সবসময় দাঁড়িয়েছেন। জিতের দুচোখে স্বপ্ন- শিক্ষক হয়ে ওঠার। শুধু এখানেই শেষ নয় তার স্বপ্নের। জিতের আর একটা বড় স্বপ্ন হল বাড়ি করার। ফুটপাথ থেকে পাকা বাড়িতে সপরিবারে নিয়ে থাকার৤সামান্য রোজগারের কারণে মাথার ওপর পাকা ছাউনি হয়ে ওঠেনি। তাই ফুটপাথই আশ্রয়স্থল জিতের। বৃষ্টি হলে নকুলেশ্বর মন্দিরে আশ্রয় নিতে হয় তার পরিবারকে। জিতের এই ফলাফলে গর্বিত পরিবার। ছোট থেকে ফুটপাথে বড়ো হয়ে ওঠা জিত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে শিখেছেন। তাইতো যেকোনও কষ্ট, সমস্যায় সে প্রস্তুত। পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে শিক্ষক হওয়ায় তার জীবনের লক্ষ্য। সে জানে তার ভবিষ্যত ফুটপাথ নয়।