Date : 2024-04-20

বাবা-মায়ের করা হাসিন জাহানের বিরুদ্ধে মামলা গ্রাহ্য হল না কলকাতা হাইকোর্টে

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক : নিম্ন আদালতে চলা মামলায়ও হাইকোর্ট কোনো হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানিয়েছেন বিচারপতি শম্পা সরকার। ভারতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম খেলোয়াড় মোহাম্মদ স্বামীর স্ত্রী হাসিন জাহানের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন হাসিন জাহানের বাবা মোহাম্মদ হোসেন এবং মা নাজমা খাতুন।
ক্রিকেটার মোহাম্মদ সামির স্ত্রী হাসিন জাহানের বিরুদ্ধে কেন তার বাবা-মা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন তা জানতে হলে অবশ্যই যেতে হবে মামলার গভীরে।

বীরভূমের সাঁইথিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেন এবং নাজমা খাতুন এর বড় মেয়ে হাসিন জাহান ছোট ভাই তারিক পারভেজ। ছোট ভাই তারিখ পারভেজ বাবা মায়ের সাথে একই বাড়িতে থাকলেও তাদের সাথে কোন রকম সম্পর্ক রাখেননি। কিন্তু ছোট ভাই তারিক পারভেজ তার স্ত্রী জুহি মাতলাব সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল হাসিনের।
মামলার বয়ান অনুযায়ী হাসিন জাহান এর ছোট ভাই তারিক পারভেজ পেশায় পাথর খাদান এর পাথর ভাঙ্গার মেশিনের ব্যবসা করতেন ।পরিবারের সুরক্ষার জন্য স্ত্রী এবং একমাত্র পুত্র সন্তানের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা বীমা করে রেখেছিলেন। ২০২১সালে মে মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ছোট ভাই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তার যাবতীয় চিকিৎসার খরচ বহন করেছিলেন হাসিন জাহান। ছোট ভাই মারা যাবার পর তার সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে শুরু হয় বিবাদ। তারিক পারভেজের স্ত্রী জুহি মাতলাব সমস্ত জীবন বীমার একমাত্র দাবিদার ছিলেন।

স্বামী মারা যাবার পর এই কিছুদিনের জন্য বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন জুহি। শ্বশুর বাড়িতে ফিরে আসার পর শ্বশুর মশাই তাকে বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি এবং একের পর এক সাঁইথিয়া পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করেন জুহি বিরুদ্ধে। শুধুমাত্র বৌমা জরিমানা বা শুধু নয় মেয়ে হাসিন জাহান এর বিরুদ্ধে থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের করেন কারণ একটাই ভাইয়ের বউয়ের পাশে দাঁড়িয়েছিল সেই কারণে একের পর এক মিথ্যে মামলায় হাসিন জাহান কে ফাঁসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তার বাবা।

অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ বর্তমানে সিউড়ি আদালতে বিচারাধীন।হাসিন জাহানের বাবা এবং মা এখানেই থেমে থেমে যাননি সমস্ত তথ্য গোপন করে কলকাতা হাইকোর্টে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন বৌমা এবং তার মেয়ের বিরুদ্ধে।

মামলার শুনানিতে হাসিন জাহান এর পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানান ব্যক্তিগত কোন স্বার্থ নেই ছোট ভাই তারিখ আক্তার অসুস্থ থাকাকালীন তার যাবতীয় চিকিৎসার খরচ বহন করেছিলেন হাসিন জাহান। ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী এবং তার নাবালক সন্তান ভবিষ্যতের কথা ভেবে তারা যাতে তাদের অধিকার থেকে কোন ভাবেই বঞ্চিত না হন সেই কারণেই তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। বাবা এবং মা যে অভিযোগ হাসিন জাহান এর বিরুদ্ধে এনেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান থানায় গিয়ে অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগ দায়ের হয়েছে পুলিশ তা যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিয়েছেন। পাশাপাশি জুহি মাতলাব পক্ষের আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন তার শশুর মশাই এবং শাশুড়ি তাকে ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার জন্যই তার বিরুদ্ধে এইরকম মিথ্যা অভিযোগ এবং মামলা করেছেন বলে অভিযোগ।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারপতি সরকার নির্দেশনায় জানিয়েছেন অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করেছে। এখানে পুলিশের কোনো গাফিলতি নেই। ভবিষ্যতে কোনো অশান্তি বা সমস্যা তৈরি হয় সে ক্ষেত্রে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং নিম্ন আদালতের যে সমস্ত মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্ট তাতে কোনো রকম হস্তক্ষেপ করবে না।