Date : 2024-04-18

শরীরে মারণ রোগের বাসা, সঙ্গীত সুধায় বিভোর শিল্পী পিন্টু নাথ

শাহিনা ইয়াসমিন, সাংবাদিকঃ- শরীরে যন্ত্রণা রয়েছে। কিন্তু মনের গভীরে অদ্ভুত এক প্রশান্তি। মারণ রোগের বিরুদ্ধে ঢাল করে তুলেছেন সঙ্গীতকে। জীবনযুদ্ধে, বেঁচে থাকার লড়াইয়ে সবাইকেই প্রেরণা দিতে পারেন এই মানুষটি। চলুন পরিচয় করা যাক।
সকালে ঘুম থেকে ওঠা ও রাতে শুতে যাওয়া পর্যন্ত মানুষের জীবনে লড়াই জারি থাকে। সেটা পেশার লড়াই হোক বা বাঁচার লড়াই। মৃত্যুর পাঞ্জা থেকে লড়াই করে কেউ যদি ফিরে আসেন তা হলে কী বলবেন। এমনই এক মানুষ রয়েছেন এই কলকাতায়। কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন শুধুমাত্র সঙ্গীতের টানে। তিনি পিন্টু নাথ। বয়স ৬৪। ক্যানসারে আক্রান্ত। বেহালার বাসিন্দা পিন্টুবাবুর প্রথম ভালোবাসা সঙ্গীত। জীবনে বাকি সব কিছুকে পিছনে রেখে সঙ্গীতকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন তিনি। গত ২০ বছর ধরে লড়াই করছেন ক্যানসারের বিরুদ্ধে।

২০০২ সালে জানতে পারেন তাঁর রোগের কথা। তখন থার্ড স্টেজ। চিকিত্সকও জবাব দিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু কোথাও যেন ক্ষীণ একটা আশা ছিল তাঁর পরিবারের। সেই আশাই সঞ্জীবনী সুধা হয়েছে। এখনও চিকিত্সা চলছে পিন্টুবাবুর। বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে বাজানো এখন প্রায় বন্ধ। তবে মিউজিক থেকে সরে থাকা মানে দেহ থেকে প্রাণকে আলাদা করে রাখা। তাই আজও তিনি পাশে নেবুলাইজার রেখে বাদ্যযন্ত্র বাজান৤বাদ্যযন্ত্র ম্যান্ডোলিনে এক্সপার্ট তিনি। কাজ করেছেন বিখ্যাত সব শিল্পীদের সঙ্গে। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, আরতি মুখোপাধ্যায়, নির্মলা মিশ্র, পূর্ণদাস বাউল, নচিকেতার মতো শিল্পীদের সঙ্গে রেকর্ডিং করেছেন তিনি। তাঁর এই অসময়ে পরিবার-বন্ধুদের সবসময় পাশে পেয়েছেন। মন খারাপ হলে আজও যন্ত্র বাজান। ভেসে যান স্মৃতির ভেলায়। গুরুর ঘরানা তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যমে প্রসারিত হয়। পিন্টুবাবুর তেমনি এক ছাত্র হলেন সুপ্রিয় মণ্ডল। পিন্টু নাথের মতো মানুষকে প্রশিক্ষক পেয়ে তিনি গর্বিত। সঙ্গীতই তাঁর কাছে সব। তাই সন্তানসম বাদ্যযন্ত্রগুলোকে আজও নেড়েচেড়ে দেখেন। বাজিয়ে শোনেন। পিন্টুবাবুর কাছে সঙ্গীতই যে ঈশ্বর।