Date : 2024-03-19

সুজিত অধিকারীর মৃত্যু – কলকাতাকে দাঁড় করাল অনেকগুলো প্রশ্নের সামনে

সায়ন্তিকা ব্যানার্জি, সাংবাদিক:- শনিবার ভরদুপুরে ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সের আটতলার কার্নিশে ঘণ্টা আড়াই বসে থাকার পর ঝুলতে ঝুলতে হাত ফস্কে পড়ে গিয়েছিলেন। তাকে উদ্ধার করে ওই হাসপাতালেরই আইটিইউতে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই মারা যান সুজিত অধিকারী নামে ওই রোগী। রবিবার তার ময়নাতদন্ত এনআরএস হাসপাতালে।

এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন কিন্তু উঠেই গেল। উঠে এল একাধিক অভিযোগও। এই ঘটনায় বেনিয়াপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের করল তাঁর পরিবার । নিউরো সাযয়েন্সের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেছেন সুজিতের পিসি।

বারবার প্রশ্ন উঠছে কীভাবে জানলা খুলে চলে গেলেন সুজিত? কেউ কেন খেয়াল করল না যে তিনি জানলা খোলার চেষ্টা করছেন? যে নার্সের হাত কামড়ে তিনি পালিয়ে যান বলে জানা যাচ্ছে সেই নার্স কী আরও লোকজন ডেকেছিলেন? কেন শুধু মাত্র ৬ তলায় এবং নীচে ফোম বেড রেখেই কাজ সারল বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী? কেন সেফটি বেল্ট পরে তার কাছে যাওয়া হল না? কেন ল্যাডার তার কাছে গেল না? এই রকম একাধিক প্রশ্ন বারবার ঘোরাফেরা করছে।

ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মাসখানেক আগেই সুজিতের স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। দুই সন্তানও ছিল সুজিতের। বড় ছেলের বয়স নয়। ছোটো ছেলের বয়স দুই। ছোটো ছেলেদের নিয়ে কীভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন সুজিত। তবে কয়েকদিনের মধ্যে সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছিলেন। দোকানেও যাচ্ছিলেন। তারইমধ্যে বাড়িতে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত লেগেছিল। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরে এসেছিল।
সেজন্য পিসির সঙ্গে মল্লিকবাজারের বেসরকারি হাসপাতালে এসেছিলেন সুজিত। হাসপাতালের লিফটেও অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন। সেই অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শনিবারই ছুটি দেওয়ার কথা ছিল তাকে। আর সেই হাসপাতাল থেকেই ফিরল তার নিথর দেহ। তার পড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে শিউরে উঠলেন সকলে। একটা মৃত্যু অনেক গুলো প্রশ্নের সম্মুখীন করে গেল সারা কলকাতাকে।