Date : 2024-04-26

আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রী। শিক্ষাকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার অভিযোগ বিরোধীদের।

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : রাজ্য সরকারের অর্থ সাহায্যে চলা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে সেই জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী কে আনার বিষয়ে ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মন্ত্রীসভা। পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক পদ থেকেও রাজ্যপালকে সরানোর যে সিদ্ধান্ত শিক্ষা দফতর নিয়েছে, সোমবার সেই সিদ্ধান্তেও শিলমোহর দিল রাজ্য মন্ত্রীসভা।

২৬ মে রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে নবান্নে সাংবাদিক সন্মেলনে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “আজ রাজ্য মন্ত্রীসভা সর্ব সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যে যত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে সেখানে আচার্য পদে রাজ্যপাল এর পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীর নাম সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করেছে।” সেদিন‌ই জানা গিয়েছিলো অচিরে রাজ্য বিধানসভায় এই সংক্রান্ত বিল আনবে শিক্ষা দফতর। রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপালের প্রবেশ আটকাতে পরিদর্শক পদ থেকে রাজ্যপালকে সরানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো রাজ্য শিক্ষা দফতর। এদিন সেই সিদ্ধান্তকেও মান্যতা দিল রাজ্য মন্ত্রীসভা। ফলে এই দুটি বিষয় নিয়েই আগামি বিধানসভা অধিবেশনে বিল আনতে চলেছে শিক্ষা দফতর। সোমবার পরিষদীয় তথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, “১০ তারিখ থেকে বিধানসভার অধিবেশন শুরু হচ্ছে। এই অধিবেশনে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধনী বিল, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধনী বিল, প্রানী ও প্রানীসম্পদ বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধনী বিল সহ শিক্ষা দফতরের ছয়টি বিল আনা হবে।” মন্ত্রীসভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তার পরপরই বিধানসভার অধিবেশন ডেকে বিল পাশ করানোর যে উদ্যোগ রাজ্য সরকার নিয়েছে তাতে এটা পরিষ্কার যে সরকার যত শীঘ্র সম্ভব রাজ্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজ্যপালের ভূমিকা ছেঁটে ফেলতে চাইছে। সরকারের এই উদ্যোগ নিয়ে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “শিক্ষাঙ্গনের স্বাধীকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এই রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের রাজনীতি, ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণ-এর রাজনীতি। তৃণমূল কংগ্রেস একটা স্বৈরতান্ত্রিক; অসহিষ্ণু রাজনৈতিক দল। শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর ওরা দলতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।” এদিকে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে সহমত জানিয়ে বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “রাজ্যপাল যেভাবে উপাচার্যদের তলব করছেন, রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে এড়িয়ে তাঁদের নির্দেশ দিচ্ছেন, সেগুলো মোটেই রাজ্যপাল সুলভ নয়। তাই এটাই ঠিক সিদ্ধান্ত।”
রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত যে বিধানসভায় সংখ্যাধিক্যের জোড়ে পাস হয়ে যাবে তা নিয়ে সন্দেহ নেই কার‌ও, তবে রাজভবনে সেই বিল গেলে রাজ্যপালের ভূমিকা কি হয় সেটাই এখন দেখার।