Date : 2024-04-20

সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীরা কি নিরাপদ?পুলিশের সামনেই মারধর স্বাস্থ্যকর্মীকে।প্রতিবাদ করতেই বরখাস্তের হুমকি কতৃপক্ষের

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক:- পুলিশ কর্মী, স্বাস্থ্য কর্মী বা যেকোন সরকারি কর্মীকে কর্তব্যরত অবস্থায় মারধর বা তাদের সাথে দুর্ব্যবহার ফৌজদারি অপরাধের শামিল হিসেবে গণ্য করা হয়। বহু ক্ষেত্রেই তা যে মানা হচ্ছে না তার আরও একটি প্রমাণ পাওয়া গেল চিত্তরঞ্জন সেবা সদন হাসপাতালে ঘটে যাওয়ার ঘটনায়।

মামলার বয়ান অনুযায়ী ২০২১সালের ১১ই ডিসেম্বর চেতলার এক রোগী কলকাতা চিত্তরঞ্জন সেবা সদনও শিশু সদনে চিকিৎসার জন্য আসেন।রোগীকে বেশকিছু ঔষধ লিখে দিয়ে সেগুলি হাসপাতালে র ফার্মাসি থেকে নিতে বলেন।সেই সময় ফার্মাসিতে দায়িত্বে ছিলেন মিহির রঞ্জন মন্ডল।
রোগীর পরিবারকে মিহির রঞ্জন বাবু জানান তাঁদের কাছে যে যে ঔষধ সরবরাহ রয়েছে সেগুলোই দিতে পারবেন।বাকি ঔষধ গুলো বাইরে থেকে কিনে নিতে হবে।এর পরেই রোগীর পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালের ফার্মাসির মধ্যে ঢুকে চিত্তরঞ্জন বাবুকে বেধড়ক মারধর করেন।সাহায্যে জন্য সেই সময় কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক এন সি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সাহায্য চাইলেও তিনি কোন সাহায্য করেননি বলে অভিযোগ।

সরকারি হাসপাতালে কর্মরত একজন স্বাস্থ্য কর্মীকে এইভাবে রোগীর পরিবার মারধর করা এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকেও কোনরকম সাহায্য না করায় পুরো বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মিহির রঞ্জন মন্ডল।
মিহির বাবুর আরো অভিযোগ রোগীর পরিবার আদতে তারা শাসকদলের কর্মী সমর্থক তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ প্রশাসন কোনোভাবেই তাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি। বরং তারা জানিয়েছেন বিষয়টি সমঝোতা করে নিতে। সেদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনার পূর্ণ বিবরণ দিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে তার নিরাপত্তা চেয়ে এবং চাকরিতে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার আবেদন করে বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। কিন্তু তারা কেউই মিহির বাবুর সাহায্যে এগিয়ে না আসায় অসহায় মিহিরবাবু কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্থ হন।

মামলাকারি মিহির রঞ্জন মন্ডলের পক্ষের আইনজীবী আশিষ কুমার চোধুরী জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হওয়ার পরেই মিহির বাবুকে চিত্তরঞ্জন সেবা সদন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি নোটিশ দিয়ে তাকে জানান কেন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না সে বিষয়ে তার উত্তর তলব করেন।
আশীষ বাবুর দাবি সরকারি হোক বা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীদের মারধর এবং হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলে সেক্ষেত্রে পুলিশ সেই ঘটনায় জড়িত রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর এবং রাজ্য সরকারের একাধিক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তা সত্বেও পুলিশ আধিকারির উপস্থিতিতে যেভাবে রোগীর পরিবার তাকে হেনস্থা এবং মারধর করে। তারপরেও পুলিশ সেই রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ।রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর এবং হাসপাতাল কতৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও মেলেনি কোন সুরাহা।অবশেষে হাই কোর্টের দ্বারস্থ ওই স্বাস্থ্যকর্মী।

চিত্তরঞ্জন সেবা সদন ও শিশু হাসপাতালে কর্মরত এক স্বাস্থ্য কর্মীকে শারীরিক হেনস্থা এবং মারধরের ঘটনায় মামলা দায়ের হলো কলকাতা হাইকোর্টে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে।