সঞ্জু সুর, সাংবাদিক ঃ “আমি আপনাদের দখল নিতে আসবো না। আমি ভালবাসতে আসবো।” দার্জিলিং এর চৌরাস্তায় জিটিএ সভাসদদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একথা বলছেন, তখন সেখানে উপস্থিত হাজার কয়েক পাহাড়বাসি স্বতঃস্ফুর্ত হাততালি দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে তারা কতটা গ্রহণ করেছেন।
মঙ্গলবার চৌরাস্তার অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বারেবারে শান্তিপূর্ণ পাহাড়ের পক্ষে সওয়াল করেন। তিনি বলেন, “আমি বন্ধুত্ব চাই, ঝগড়া চাই না। আমি পাহাড়ের দাদা, বোনেদের খুশি চাই। আমি শুধু আপনাদের অনুরোধ করবো পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখুন।” পাহাড়ের সব রাজনৈতিক দলকে অভিনন্দন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি পাহাড়ের সব রাজনৈতিক দলকে ধন্যবাদ জানাই যেভাবে আপনারা এত শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন করেছেন। পাহাড়ের মানুষ দেখিয়ে দিয়েছেন পাহাড়ের মানুষ যা করতে পারে তা অন্য কেউ পারে না।” কিছুটা হুঁশিয়ারির সুরেই এরপর মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, “কোনোভাবেই পাহাড়কে অশান্ত হতে দেবো না। কোনো ধান্দাবাজের কথায় পাহাড়ে যেন অশান্তি না হয় সেটা আপনারা দেখবেন।”
মুখ্যমন্ত্রীর কথার রেশ টেনে বিজিপিএম (ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা) নেতা অনীত থাপা বলেন, “পাহাড়ে এতদিন পর প্র্যাকটিক্যাল পলিটিক্স শুরু হয়েছে। আমি পাহাড়ের সবাইকে নিয়ে পাহাড়ের বিকাশের জন্য, ইউনাইটেড পাহাড়ের জন্য কাজ করবো।” মুখ্যমন্ত্রীর পাশে বসে অনীত থাপার ঘোষণা, “পাহাড়ে আর কোনো দাঙ্গা হবে না। শান্তিপূর্ণ পাহাড় রাখার দ্বায়িত্ব আমি নিজের কাঁধে নিচ্ছি।” মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় সময়েই বলে এসেছেন পাহাড় হাসছে। মাঝখানে কিছুটা অস্থির রাজনৈতিক অবস্থার মধ্য দিয়ে গেলেও আবার পাহাড় আক্ষরিক অর্থেই হাসছে, এমন দার্জিলিং কেই চায় রাজ্যবাসী, এমন দার্জিলিং কেই চায় পাহাড়বাসী, এমন দার্জিলিং কেই চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।