Date : 2024-03-29

রেকর্ড গড়ে মারা গেল “রাজা”। শোকপ্রকাশ বনমন্ত্রী, জেলাশাসকের।

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : কুমিরের কামড় তাকে হারাতে পারেনি। সারা শরীরে দশটা ক্ষত নিয়ে তারপরেও পনেরো বছর বেঁচে ছিল সে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বার্ধক্যের কাছে হার মানতে হলো “রাজা”-কে। সোমবার ভোররাতে আলিপুরদুয়ার জেলার দক্ষিণ খয়েরবাড়ি রেসকিউ সেন্টারে মারা যায় ভারতের সবচেয়ে বেশিদিন বেঁচে থেকে রেকর্ড গড়া বাঘ “রাজা”।

২০০৮ সালের আগষ্ট মাস। এগারো বছরের একটি পূর্ণ বয়স্ক রয়াল বেঙ্গল টাইগার কে নিয়ে আসা হয় দক্ষিণ খয়েরবাড়ি রেসকিউ সেন্টারে। কুমিরের সঙ্গে এলাকা দখলের লড়াইতে তখন সে মারাত্মক ভাবে আহত। সারা শরীরে দশটির‌ও বেশি ক্ষত‌। পশু চিকিৎসক প্রলয় মন্ডল ও ওয়াইল্ড লাইফ গার্ড পার্থ সারথি সিনহা সহ দক্ষিণ খয়েরবাড়ি রেসকিউ সেন্টারের কর্মিদের নিরলস প্রচেষ্টায় সে যাত্রায় বেঁচে যায় বাঘটি। তবে পিছনের বাঁ দিকের পা টি তাকে খোয়াতে হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাঘটিকে আর স্বাভাবিক জঙ্গলের জীবনে ফিরিয়ে দেওয়া যায় নি। “রাজা” নাম নিয়ে খয়েরবাড়িতেই থেকে যায় সে।

ধীরে ধীরে ওই রেসকিউ সেন্টারের সবার খুব প্রিয় হয়ে ওঠে “রাজা”। কিছুদিন আগেই খুব জমজমাটভাবে রাজা’র পঁচিশ বছরের জন্মদিন পালন করা হয়। বাঘেরা সাধারনত সতেরো, আঠারো থেকে সর্বাধিক উনিশ বছর বাঁচে। সেখানে “রাজা” নিজের একটা পা খুইয়েও পঁচিশ বছরের বেশি বেঁচে রয়েছে এটা একটা বিষ্ময় ছিল পশু বিশেষজ্ঞ মহলে। রাজার মৃত্যু তে শোকপ্রকাশ করে তার দেহে মালা দেন আলিপুরদুয়ার জেলার জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মীনা। বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও যথেষ্ট ব্যথিত রাজা’র মৃত্যুতে। শোকপ্রকাশ করে তিনি বলেন, “পঁচিশ বছরের জন্মদিন পালন করলাম আট মাস আগে। দশ রকমের খাবার ওর জন্য করা হয়েছিলো। রাজা খুব মিশুকে ছিল। খাঁচার ভিতরে থেকেই বাচ্ছাদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতো। আমরা আজ সত্যিই খুব ব্যথিত। ‘রাজা’ আমাদের কাছে একটা ব্যতিক্রম ছিল।” “রাজা”-র স্মৃতির উদ্দেশ্যে আলিপুর চিড়িয়াখানা ও সুন্দরবনের ঝড়খালিতে দুটো স্ট্যাচু করা হবে বলেও জানান জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।