সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক:- ভারত উপমহাদেশে দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় ভাতের পরেই রয়েছে রুটির স্থান। সকাল, দুপুর বা রাত খাবারের পাতে রুটি যথেষ্ট প্রচলিত। অনেক সময়ই গৃহিণীরা অভিযোগ করেন রুটি ভালভাবে ফুলে উঠছে না। যার ফলস্বরূপ অনেকেই আর বাড়িতে বানানো রুটি না খেয়ে দোকানের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। চলুন দেখেনি কীভাবে বানানো হলে রুটি হবে নরম তুলতুলে আর ফুলবে লুচির মতো। প্রথমেই জানিয়ে রাখি রুটি তৈরি করার বিশেষ কিছু নিয়ম রয়েছে। তাই অবশ্যই রুটি তৈরির সময় এই নিয়ম গুলোর প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। নয়তো কখনই সঠিকভাবে রুটি তৈরি করা যাবেনা।
১. অবশ্যই রুটি তৈরি করার আটা ভালোভাবে ছেঁকে নিতে হবে। কোনও রকমের পোকামাকড় বা ময়লা আটায় না থাকে সেই দিকে বিশেষ ভাবে নজর দিতে হবে।
২. রুটির আটা মাখার সময় তাতে সামান্য গরম জল ব্যবহার করুন। তারপর সেই জল দিয়ে ভাল করে আটা মাখুন। চাইলে আটায় সামান্য তেলও মেশাতে পারেন। এতে কখনই আটা কিন্তু শক্ত হয়ে যাবে না এবং রুটি বানানোর সময় সুবিধে হবে।
৩. যদি রুটিকে খুব বেশি সুস্বাদু বানাতে চান সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনারা সামান্য দই ব্যবহার করতে পারেন।। শুধুমাত্র দই না, রুটি তৈরিতে কিন্তু দুধ ও ব্যবহার করা যায়। তবে প্রতিদিন দুধ বা দই দিয়ে রুটি বানানো সম্ভব নয়। তবে যদি টিফিন হিসেবে রুটি নিয়ে যেতে হয় দূরবর্তী কোন স্থানে তাহলে কিন্তু দুধ বা দই দিয়ে রুটি তৈরি করতে পারেন, এতে রুটি চট করে নষ্ট হবে না।
৪. আটা মাখার সঙ্গে সঙ্গে তা দিয়ে রুটি তৈরি করবেন না। বরং একটা বাটিতে মাখা আটা রেখে তা থালা বা পরিস্কার কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখুন। ১০-১৫ মিনিট পর লেচি তৈরি করুন।
৫. রুটি তৈরি করার সময় অনেকেই কিন্তু কম বেশি শুকনো আটা ব্যবহার করে থাকেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই রুটি সেঁকে নেওয়ার আগে ভাল করে সেই সমস্ত শুকনো আটা ঝেড়ে নেবেন।
৬. খুব গরম তাওয়ায় রুটি না সেঁকাই ভাল। বরং, তাওয়ার আঁচ মাঝারি রাখুন। যাতে কোনওভাবেই রুটি খুব বেশি পুড়ে না যেতে পারে। এতে যেমন দেখতে খারাপ লাগবে ঠিক তেমনভাবেই স্বাদের হেরফের হবে।
৭. আটা মাখা বেঁচে গেলে তা ফ্রিজে রাখার আগে কয়েকটা বিষয় মাথায় রাখুন। ২৪ ঘণ্টার বেশি পুরনো মাখা আটা ব্যবহার করা উচিত নয় একেবারেই। আটা ফ্রিজে রাখার আগে তার গায়ে ঘি বা তেল লাগিয়ে নিন। ঘি বা তেল লাগিয়ে রাখলে কিন্তু পরবর্তীতে রুটি বেলার সময় কোন অসুবিধা হবে না।
৮. যখন আটা মাখবেন কিংবা রুটি বেলবেন তখন গ্যাসটেবিলের উপর বা মেঝের উপরে একটি খবরের কাগজ পেতে নেবেন। এতে সহজে রান্নাঘর নোংরা হবে না এবং আপনার সময় অনেকটাই সাশ্রয় হবে।
৯. খেয়াল রাখবেন রুটি যেন কোনওভাবেই পুড়ে না যায়, কারণ পুড়ে গেলে কখনই রুটি ফুলে উঠবে না। তাই খুব সাবধানে কিন্তু তাওয়া ব্যবহার করে রুটি সেঁকতে হবে।
১০. আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদনে আমরা সর্বশেষ যে টিপসটি ব্যবহার করতে চলেছি তা হল, তাওয়ায় রুটি করার সময় বা রুটি সেঁকার সময় অনেকেরই হাতে গরম লাগার কারণে ভালভাবে রুটি তৈরি করতে পারেন না। তারা বাজার চলতি যে কোন বড় চিমটে কিনতে পারেন তাহলে হাতে গরম লাগার সমস্যা থাকবে না।
এই দশটি টিপস ভালভাবে মনোযোগ সহকারে মেনে চললেই রুটি ফুলে উঠবে ফুটবলের মতো ও নরম।