Date : 2024-03-28

নানুর দিয়েছে “রাজটিকা”

বিশ্বজিত ভট্টাচার্য, সাংবাদিকঃ সম্প্রতি বীরভূমকে অনেকেই বলেন কেষ্টভূম। সেই কেষ্টভূমের কেষ্ট অর্থাৎ অনুব্রত মণ্ডল স্বমহিমায় থাকাকালীন তাঁর বিখ্যাত অথবা অখ্যাত শব্দবন্ধেই মশগুল ছিল রাজ্যবাসী। এখন অনুব্রত সিবিআই এর হেফাজতবাসী হতেই শুরু হয়েছে তাঁর উত্থানের শিকড় খোঁজা। লালমাটির দেশে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে সাধারণ ঘরের গো বেচারা ছেলের অগাধ ক্ষমতার অধীশ্বর হয়ে ওঠার কথা।

নানুরের এক গ্রামে বাবার মনিহারি দোকান চালাতেন অনুব্রত। পড়াশোনায় তেমন মাথা ছিল না। তবে ব্যবসাবুদ্ধি খারাপ ছিল না। সেই বুদ্ধির জোরে নিচুপট্টিতে গ্রিল তৈরির দোকানে আর মাছের ব্যবসাও শুরু করেছিলেন তিনি।

বীরভূমের সদ্যপ্রয়াত এক টাকার ডাক্তার সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কংগ্রেসে আসা। যুব কংগ্রেসের কর্মী হওয়ার সূত্রেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয়। এর পরে ১৯৯৮ সালে তৃণমূলে আসেন অনুব্রত।

অনুব্রত ঘনিষ্টরা বলেন, ২০০০ সালে নানুরের সুচপুর গণহত্যা না হলে বোধ হয় কেষ্টর রাজনীতি ভাগ্য খুলতো না সুচপুরে নিহত তৃণমূল সমর্থক খেতমজুরদের দেহগুলি কবর দেওয়ার তদারকি করা থেকে শুরু। সেই সময়ে বীরভূমে সিপিএমের বিপুল দাপট।

সেই দাপট উপেক্ষা করে নানুর মামলার রায় বেরনো পর্যন্ত আদালতে আইনজীবীদের সঙ্গে উপস্থিত থাকার পাশাপাশি দলের প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখার কাজ করে যান অনুব্রত। তারই ফলস্বরূপ ২০০৩ সালে সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় সরে দাঁড়ালে তিনি জেলাসভাপতি হন।

২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে এই এগারো বছরে ক্ষমতায় বাড়তে বাড়তে বীরভূমের রাজনীতিতে একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এই এগারো বছরে অনেক দোর্দন্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা লুডো খেলায় সাপের মুখে পড়ে ক্ষমতা হারালেও অনুব্রত ছিলেন ব্যতিক্রম। তাঁর সঙ্গে অনেকে দিল্লির এক গাড়ি মেকানিক অর্জুন দাস এর মিল পাচ্ছেন। সঞ্জয় গান্ধীর ছিল গাড়ির শখ। সেই সূত্রে অর্জুন দাস এর সঙ্গে পরিচয়। তারপরে জরুরী অবস্থার সময়ে এই অর্জুন দাস ছিলেন দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দে বহুচর্চিত নাম। অনেক কংগ্রেসী নেতা-মন্ত্রীর থেকেও বেশি ছিল তাঁর ক্ষমতা।