Date : 2024-04-20

প্রতিবন্ধী প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে প্যারা অলিম্পিকসে অংশগ্রহণ করেছিলেন। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বঞ্চিত করা হয়েছে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে।মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে।

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক : ২০১২ সালে প্যারা অলিম্পিকসে সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন বঙ্গ তনয়া দিবাকর কুন্ডু। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাকে ক্রীড়াবিদ সম্মানে সম্মানিত করেছিলেন। কিন্তু সেই রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত দপ্তরে যোগ্য প্রার্থী হয়েও তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন দিবাকর।

উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট অবিলম্বে তার অভিযোগ খতিয়ে দেখে যদি কোথাও মনে হয় নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে তারও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাঁকে জানাবেন খোদ জেলা শাসক।

বুধবার বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাস মামলার শুনানি চলাকালীন জাতীয় সাঁতারু দিবাকর কুন্ডুর পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানান প্রতিবন্ধী হওয়া সত্বেও সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে প্যারা অলিম্পিকসে অংশগ্রহণ করেছিলেন। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দিবাকর কুন্ডুকে শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদ হিসাবে সম্মানিত করেন। কিন্তু নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকায় যা যা সুবিধা পাওয়ার ছিল সেই সমস্ত সুবিধা থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

উত্তর দিনাজপুর ডিস্ট্রিক্ট লেভেল সিলেকশন কমিটি সেই সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছেন।নিয়োগ প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর সহ মেধা তালিকা প্রকাশ না করেই নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আইনজীবী আশিস বাবু। পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন রাইট টু ইনফরমেশন এক্ট অনুযায়ী জানতে চাওয়া হলে কোন সদুত্তর দেওয়া হয়নি। একজন প্রতিবন্ধী ক্রীড়াবিদ হিসেবে তাঁর নূন্যতম সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ মামলাকারীর আইনজীবীর।

সব পক্ষের শুনানির পর বিচারপতি শম্পা সরকার উত্তর দিনাজপুরের জেলা শাসককে নির্দেশ দেন অবিলম্বে মামলাকারীর সমস্ত নথিপত্র নিয়ে অভিযোগ খতিয়ে দেখে যদি কোন নিয়োগে দুর্নীতি হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।পাশাপাশি কেন ক্রীড়াবিদ বঞ্চিত হলেন তার রিপোর্ট ৬ সপ্তাহের মধ্যেই ক্রীড়াবিদ কে জানাতে হবে হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিকে সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন দিবাকর কুন্ডু। বলে রাখা ভালো যারা এই প্যারা অলিম্পিকসে অংশগ্রহণ করেন তারা প্রত্যেকেই কমবেশি প্রতিবন্ধী। দিবাকর কুন্ডু ছিল শারীরিক প্রতিবন্ধী।
ন্যাশনাল প্যারাও অলিম্পিতে অংশগ্রহণ করার জন্য ২০১৫ সালে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাকে মেরিটোরিয়াস স্পোর্টস পার্সেন্ট হিসাবে সার্টিফিকেট প্রদান করেন যাতে সে যে কোন সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারেনি।
২০১৮ সালে উত্তর দিনাজপুর জেলায় বিভিন্ন পঞ্চায়েতের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট পদের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে সেখানে দিবাকর কুন্ডুও আবেদন জানায়। ওই নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিক অসংগতি দেখতে পায় দিবাকর বাবু। যেখানে সরকারি নির্দেশিকা মেনে ক্রীড়াবিদদের অগ্রাধিকার না দেওয়া এবং পরীক্ষার অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ না করা এইরকম একাধিক অসংগতি দেখতে পাওয়া যায়।রাজ্য সরকারের শ্রম দফতরের গেজেট নোটিফিকেশন না মানা এবং প্রাপ্ত নম্বর সমেত মেধা তালিকা প্রকাশ না করা র অভিযোগ।এবং বারংবার RTI(তথ্যের অধিকার আইন)আবেদনে সর্বনিম্ন নম্বর পাওয়া নামের তালিকা না দেওয়ায় হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন জাতীয় সাঁতারু বঙ্গ সন্তান দিবাকর কুন্ডু।