Date : 2024-04-20

বিশ্বের প্রথম ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চলা ঐতিহাসিক গাড়ি আজও সংরক্ষিত আছে।

শাহিনা ইয়াসমিন, সাংবাদিক : কতো অজানা রহস্য এ আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িত। প্রতিনিয়ত বহু অজানা রহস্য আমাদের সামনে উদঘাটন হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার বিবর্তনও ঘটে। সেই রহস্য আমাদের শিহরণ জাগায়। সেরকমই একটি রহস্য হলো উনিশ শতকে। উনিশ শতকে পৃথিবীর সবচেয়ে গতির গাড়ির নাম ‘লে জামাইস কনটেন্ট’। এই গাড়িটি সেইসময় বিশ্ববাসীর কাছে বিস্ময় ছিল। যা মানুষকে অবাক করে দেয় এখনও। ‘লে জামাইস কনটেন্ট’ গাড়িটির নকশা করছিলেন ক্যামিল জেনাটজি। এই গাড়ির ছিল একটি ধাতব সিলিন্ডার, যাতে যুক্ত ছিল চারটি চাকা। গাড়িটির দৈর্ঘ্য চার মিটারের চেয়ে কম হলেও গতিতে ছিল শত কিলোমিটারের বেশি তেজ।


গাড়ির গঠন ছিল বেশ অদ্ভুত। এ গাড়িতে চালক বসার সেভাবে জায়গা ছিল না। গাড়ির উপর বসে ঘোড়ায় চড়ার স্বাদ পেতেন চালক। এমনকি এ গাড়িতে কোনো সিট বেল্ট, রোল কেজ বা কোনো আধুনিক সুরক্ষা ব্যবস্থাও ছিল না। কিন্তু এটিই পৃথিবীর প্রথম ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চলা গাড়ি। ‘লে জামাইস কনটেন্ট’ ছিল একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি। চালক হিসেবে ১৮৯৯ সালের ২৯ এপ্রিল দ্রুততম গাড়িটি চালিয়ে প্রতি ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটারের বেশি গতির সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়েন বেলজিয়ামের চালক ক্যামিল জেনাটজি। জেনাটজি ছিলেন বেলজিয়ামের একটি ধনী পরিবারের সন্তান। একই সঙ্গে ছিলেন গাড়ির পোকা। তার জীবনের বিশাল আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় গাড়ি। এজন্য ‘লে জামাইস কনটেন্ট’ গাড়ির নকশায় সফল হন কীর্তিমান এ চালক। প্রতি ঘণ্টায় ১০৫.৮৮ কিলোমিটার গতি উঠানোর সক্ষমতা অর্জন ছিল তাঁর লক্ষ্য। ১৮৩০-এর দশকে প্রথম বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি হয়েছিল। সেই সময় নন-রিচার্জেবল সেল ব্যাটারিতে এগুলো চালিত হতো। রিচার্জেবল ব্যাটারি আবিষ্কারের মাধ্যমে মোটর শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়। ১৮৫৯ সালের দিকে প্রথম রিচার্জেবল ব্যাটারি আবিষ্কার হয়। প্রথম মানুষ বয়ে নিয়ে যাওয়া বৈদ্যুতিক যান ১৮৮১ সালের এপ্রিল মাসে প্যারিসের রাস্তায় চলেছিল। ফরাসি উদ্ভাবক গুস্তাভ ট্রোভ পরীক্ষামূলক এটি চালান। এরপর থেকেই বৈদ্যুতিক গাড়ি গতির নতুন নতুন রেকর্ড গড়তে থাকে চালকরা। উনিশ শতকে গতির সর্বোচ্চ রেকর্ড করা সেই গাড়িটি আজও গতির গাড়ি প্রেমীদের মনে রয়েছে। বিশ্বের প্রথম ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চলা ঐতিহাসিক বিস্ময় গাড়িটির একটি রেপ্লিকা আজও ফ্রান্সের কমপিউন অটোমোবাইল জাদুঘরে সংরক্ষিত করা আছে।