Date : 2024-04-25

অধিকারের দাবিতে কর্মচারীদের ডাকা ধর্মঘটের জেরে স্তব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের বিচার প্রক্রিয়া

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক : ফের কর্ম বিরতি কলকাতা হাইকোর্টে ।স্তব্ধ বিচার ব্যবস্থা রাজ্যের শীর্ষ আদালতে। শয়ে শয়ে মামলাকারীরা, তারা বিনা বিচার পেয়েই ফিরে গেলেন। তবে কলকাতা হাইকোর্টের কর্মচারীদের যে দাবি তা অবশ্যই ন্যায় সঙ্গত বলেই মনে করছেন আইনজীবী মহলের একাংশ।

করোনা অতিমারির কারণে দীর্ঘ সময় ধরে বিচার ব্যবস্থা থমকে গিয়েছিল রাজ্যে। ধীরে ধীরে জনজীবন স্বাভাবিক হওয়ার পরেও কলকাতা হাইকোর্টে ভার্চুয়ালি শুনানির ব্যবস্থাপনা করা করা হয়। এই মুহূর্তে সচল রয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে বুধবারের হাইকোর্টের স্তব্ধতা যেন বিচারব্যবস্থাকেই অনেকটাই চ্যালেঞ্জের মুখেই ফেলে দিয়েছে তা বলাই বাহুল্য।

অধিকারের জন্য লড়াই করার অধিকার সংবিধান তাদের দিয়েছে। কিন্তু কর্মবিরতি বা ধর্মঘট রাজ্যের বা মানুষের যে কোন উন্নয়নের কাজে লাগে না তা রাজ্যের চলে আসা একাধিকবার ধর্মঘটে বারবার প্রমাণ করেছে। কলকাতা হাইকোর্টের কর্মচারীদের এই ধর্মঘট বা কর্মবিরতি আগামী দিনে কতটা সুফল দেবে তা হয়তো সময়ই উত্তর দেবে। তবে বড় ক্ষতির মুখে যে পড়েছে মামলাকারীরা, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না বলেই দাবি হাইকোর্টের আইনজীবী মহলের।

হুঁশিয়ারী তাঁরা আগেই দিয়েছিলেন ,তাদের দাবি না মিটলে কর্মবিরতির পথেই হাঁটবেন কলকাতা হাইকোর্টের ছটি কর্মচারী সংগঠনের যৌথ মঞ্চের। বুধবার সকালে রাজ্যের শীর্ষ আদালতের মূল গেটে কলকাতা হাইকোর্টের কয়েকশো কর্মচারী তারা কর্ম বিরতিপালন করলেন।

বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের সাতটি কর্মচারী সংগঠন যাদের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্ট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন ,কলকাতা হাইকোর্ট কর্মচারী ফেডারেশন, কলকাতা হাইকোর্ট তপশিলি জাতি উপজাতি কর্মচারী ফোরাম, এসইও স্টেনোগ্রাফার অ্যাসোসিয়েশন, কলকাতা হাইকোর্ট গ্রুপ ডি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সহ আরো তিনটি কর্মচারী সংগঠ সংগঠনের যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে এদিন কর্মবিরতি পালন করেন ।যার জেরে বিচার প্রক্রিয়া একেবারেই থমকে গিয়েছে।

সেদিন সংগঠনের পক্ষে সুপ্রতিক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি তিন জন বিচারপতিকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। ২৩ মাসের বকেয়া এবং এরিয়ার ২০১৯ সাল থেকে পড়ে আছে।সেগুলো মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। দ্বিতীয় হচ্ছে তাদের পে কমিশন চূড়ান্ত করতে হবে। তৃতীয় পে-কমিশন এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। বারবার তারা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কেউই কর্ণপাত করেননি বলে এই কর্ম বিরতির পথ বেছে নিতে হয়েছে।

বুধবার কর্মচারী সংগঠনের এই কর্ম বিরতির বিষয়টা জানার পরেই প্রধান বিচারপতি হস্তক্ষেপ করেন এবং রাজ্যের অর্থ দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে ডেকেও পাঠান। অর্থ দপ্তরের সেক্রেটারি জানিয়েছেন আগামী ২২শে ডিসেম্বরের মধ্যে তারা একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করবেন। সেখানে কর্মচারীদের যে দাবি অর্থাৎ২০১৯ সাল থেকে তাদের যে বকেয়া ভাতা এবং পে কমিশনে তাদের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয় বিবেচনা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন অর্থ দপ্তর।

কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের শীর্ষ আদালত যেখানে বিভিন্ন জেলা থেকে বহু মানুষ তারা মামলার জন্য এখানে আসেন অনেকের কাছেই বিষয়টি অজানা থাকার কারণে সকালেই তারা পৌঁছে যান হাইকোর্টে এবং তারা জানতে পারেন আজ কর্ম বিরতির জেরে কোন মামলাই শুনানি হবে না। নিরাস হয়েই ফিরতো হয়েছে মামলা কারীদের।