Date : 2024-04-19

সব থেকে বড় ল্যাংচা খেয়েছেন কখনও ? হ্যাঁ সব থেকে বড় ল্যাংচা পাওয়া যাচ্ছে কলকাতাতে দাম মাত্র ২৫ টাকা

শাহিনা ইয়াসমিন, সাংবাদিকঃ শ্রীহরি মিষ্টান্ন ভান্ডার। ভবানীপুর থানার ঠিক উল্টোদিকে রাস্তার ওপর অবস্থিত শ্রীহরি মিষ্টান্ন ভান্ডার। দোকানের বয়স হয়ে গেল ১১২ বছর। ১৯১২ সালে এই দোকানটি স্থাপিত হয়। বাপ-ঠাকুরদার আমল থেকে চলছে এই দোকান। তিনপ্রজন্মের পর এখন দোকানের বর্তমান মালিক সুব্রত গুইন। পঞ্চাশোর্দ্ধ সুব্রত বাবু কাউন্টারে বসে ডাটের সঙ্গে তদারকি করে যাচ্ছেন। একাই শ্রীহরি মিষ্টান্ন ভান্ডার ১০০ বছরের উপরে হওয়ায় কলকাতার প্রাচীনতম মিষ্টির দোকানের মধ্যে একটি বলা যেতেই পারে। এই দোকানের বহু খাবারই বিখ্যাত। তবে যে খাবারের জন্য এই দোকানটি বিখ্যাত সেই খাবার হল কচুরি-ছোলার ডাল ও ল্যাংচা। তবে যেসে ল্যাংচা নয়। জাম্বো ল্যাংচা পাওয়া যায়। অর্থাত সব থেকে বড় ল্যাংচা যদি কোথাও পাওয়া যায় তার একমাত্র ঠিকানা শ্রীহরি মিষ্টান্ন ভান্ডারে। হ্যাঁ শুনেই আশ্চর্য হলেন তো! এখানে বিভিন্ন সাইজের ও বিভিন্ন দামের ল্যাংচা পাওয়া যায়। জাম্বো ল্যাংচার দাম ২৫ টাকা। তবে এখানেই শেষ নয়।

শ্রীহরি মিষ্টান্ন ভান্ডারে হালুয়া কচুরি, কচুরি-ছোলার ডাল ও বিভিন্ন ধরণের মিষ্টিও পাওয়া যায়। হালুয়া কচুরি পাওয়া যায় ভোর ছটা থেকে সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। তারপর শুরু হয় কচুরি-ছোলার ডাল পরিবেশনের পালা। দেখা গেল প্লেটে কচুরি-ছোলার ডালের সঙ্গে হাল্কা চাটনি দিয়ে পরিবেশন করা হচ্ছে। জাম্বো ল্যাংচা তো পাওয়াই যায় তার পাশাপাশি যেসব মিষ্টি রয়েছে তা হলো মোদক, রসগোল্লা, কমলা ভোগ, মালাই চমচম,বিভিন্ন রকমের সন্দেশ তবে শীতকাল এলেই নলেন গুড়ের রসগোল্লা, মোয়া, নলেন গুড়ের সন্দেশ, পাটিসাপটা সহ আরও অনেক মিষ্টি পাওয়া যায় এখানে। এই দোকানের কর্ণধার সুব্রত গুইন জানান, প্রায় ৪০ জন কর্মচারী কাজ করছেন এই দোকানে। করোনার ভয়াবহ সময় কাটার পরও কোনও কর্মচারীর চাকরি যায়নি। বরং কর্মচারী নেওয়া হয়েছে।

আজকাল বাঙালী ব্যবসায়ীদের দেখা যায় না। বাঙালি ব্যবায়ীদের ঠিকে থাকার বার্তা দেন সুব্রত বাবু। এই দোকানে বহু বছর ধরে আসছেন এমন অনেক খাদ্যরসিক মানমুষদের পাওয়া গেল। কেউ আবার ৩৫ বছর ধরে খেয়ে আসছেন শুধু এই দোকানেই। এমনি এক খাদ্যরসিক মানুষকে হলেন সুমন ঝা। যিনি সময় পেলে সকালের প্রাতঃরাশ এই দোকানেই করেন। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বহু খাবারের দোকান বা রোস্তোরাঁয় অনলাইনে খাবার অর্ডার করার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু ১১২ বছর বয়স হয়ে গেলও পুরনো নিয়মেই চলছে দোকানের বিকিকিনি। কাউন্টারে এসেই খাবার নিয়ে যেতে হবে এবং পেমেন্ট করতে হবে। আজও এই নিয়ম বহাল রেখেছেন সুব্রত বাবু।