Date : 2024-04-19

এযেন মেঘ না চাইতে বৃষ্টি! মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সৌজন্যে সাড়ে তিন দশক পর অন্ধকার ঘরে ফুটলো আলো।

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক : গলি থেকে রাজপথে লাম্পপোস্ট থেকেব্রিজে সর্বত্রই যখন রং বেরঙের আলো জ্বলে রাজ্য সরকার এবং পুর সভার উদ্যোগে সেখানে গত ৩৬বছর ধরে অন্ধকারেই জীবনযাপন করে আসছিলেন ব্রহ্মপুরে সকিনা শেখ। দীর্ঘ ৩৬ বছর বিদ্যুৎ হীন অবস্থায় জীবন যাপন করেছেন গড়িয়ার ব্রহ্মপুরের এই শেখ পরিবার। শেষে সেই অন্ধকার কাটিয়ে ঘরে জ্বলল আলো। বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়ে উচ্ছ্বাসিত শেখ পরিবারের সকলেই।

গ্রীষ্মের মরশুমে তীব্র দাবদাহে যখন শহরবাসীর প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠত তখন তাঁরা তাল পাতার তৈরি হাত পাখাতেই গরমের মোকাবিলা করতেন।যে সময় মানুষ স্বস্তি পেতে ফুল স্পিডে পাখা অথবা শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র চালিয়েছে এখন অসহায় হয়ে সেই গরমে হাত পাখাই ছিল তাদের সম্বল।

শুধু কি তাই,মোবাইল চার্জ থেকে টিভির অনুষ্ঠান দেখা বা খবর শোনা থেকে শুরু করে দেওয়া সবটাই ছিল প্রতিবেশী নির্ভরশীল। আর্থিক পরিস্থিতি এত তলানিতে যে বিদ্যুতের সংযোগ নিতে যে পরিমাণ টাকা খরচ করতে হবে সেটা তাদের কাছে বিলাসিতা। শেষে অন্ধকার ঘরে এলো আলো। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সহযোগিতায় বাড়িতে বিদ্যুৎতের সংযোগ এসেছে। নিজের হাতে সুইচ অন করে আলো জ্বালালেন সাকিনা শেখ। আঁধার পেড়িয়ে আলোর ছটায় উচ্ছাসে ফেটে পড়লেন তিনি। এ যেন এক অন্য তৃপ্তি।গোটা পরিবারের চোখে মুখে যেন নতুন সকাল দেখতে আনন্দ ফুটে উঠেছিল।

নিরবিচ্ছিন্ন দ্বীপ বা প্রত্যন্ত গ্রাম নয় , বিরল ছবি মহানগরীর বুকেরই। কলকাতা পুরসভার ১১১ নং ওয়ার্ডে ব্রহ্মপুর জি ব্লক। সংযুক্ত এলাকার এই চত্ত্বরে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে বেশ কয়েক বছর আগেই। আর সেখানেই এমন দীর্ঘ ৩৬ বছর বিদ্যুৎহীন থেকেছে এক পরিবার। সকিনা শেখের সঙ্গে থাকেন তাঁর মেয়ে ও জামাই।
সাম্প্রতি বিশেষ কাজে ব্রহ্মপুরে এসেছিলেন টালিগঞ্জের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তাকে সামনে পেয়েই সকিনা শেখ তার এই অসহায়তার কথা জানান।
কলকাতা পুরসভা এলাকায় এমন কাণ্ডে কার্যত হতচকিত হয়ে যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। অভিযোগ পাওয়ার পরেই বিদ্যুৎ দপ্তরকে ওই পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। মন্ত্রী নির্দেশের পরে কালবিলম্ব করেনি দপ্তর।

পৌরপিতা সন্দীপ দাসের সহায়তায় দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ মেলে তার ঘরে। মন্ত্রীর নির্দেশেই পৌরপিতা সন্দীপ দাস বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সঙ্গে কথা বলে সমস্ত প্রক্রিয়া চালান।
এদিন যেন সেই অসাধ্য সাধন হলো। বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়ে খুশি সাকিনারা পরিবার। তিনি বলেন, ৩৬ বছর ধরে এখানকার বাসিন্দা। কারেন্টের সংযোগ নেওয়ার মত আর্থিক সামর্থ্য ছিল না। সেভাবে কাউকে বলে উঠতে পারিনি, সাহায্যের কথা। তবে সময়ের প্রয়োজনীয়তা টাকেও অস্বীকার করা যায় না। তাই বাধ্য হয়ে নিজের অসহায় অবস্থার কথা জানিয়েছিলাম। মন্ত্রী ও স্থানীয় কাউন্সিলার উপকার করেছেন। তাদের দুজনের সহায়তায় অন্ধকার ঘুচে ঘরে আলো ফুটলো।