Date : 2024-04-24

“বন্দে ভারত” নিয়ে “মন্দ” রাজনীতির অভিযোগ। আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর।

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে ঢিল ছোড়া নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে রাজ্যকে ও রাজ্যের শাসকদল কে তুলোধুনা করেছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার পূর্ব রেল থেকে ভিডিও প্রকাশ করে জানিয়ে দেওয়া হয় ঢিল ছোড়ার ঘটনা এরাজ্যের নয়, বিহারে ঘটেছে। তারপরেই ফেক খবর ছড়ানো নিয়ে আইনি পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

দিন দুই আগে শিলিগুড়ি থেকে হাওড়া ফেরার পথে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে ঢিল ছোড়ার ঘটনা ঘটে। শোনা যায় মালদহের কাছে এই ঘটনা ঘটেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় বেশকিছু ছবি। সেই ছবি শেয়ার করে বিজেপির একর পর এক নেতা টুইট করতে থাকেন। ট্রেনে ঢিল ছোড়ার ঘটনায় রাজ্যের ব্যর্থতার দিকে আঙুল তোলেন তারা। অমিত মালব্য থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারী, দীলিপ ঘোষ থেকে তথাগত রায়, সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে বিজেপির একের পর এক রাজ্য নেতা টুইট করে বলেন, রাজ্যে কোনো আইনের শাসন নেই। যে বন্দে ভারত ট্রেন জাতীয় গর্ব, সেই ট্রেন ও এরাজ্যে সুরক্ষিত নয়।শাসক দলের নতুন কর্মসূচি “দিদির সুরক্ষা কবচ”-কে কটাক্ষ করে বলা হয় দিদি শুধু তোলাবাজদের সুরক্ষা দিচ্ছেন। জাতীয় সম্পত্তির কোনো সুরক্ষা নেই। এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব রেলের থেকে বিবৃতি প্রকাশ্যে আসে। বিবৃতির স্বপক্ষে একটি ভিডিও ও প্রকাশ্যে আসে। সেই বিবৃতিতে অনুযায়ী (বিজেপি যাই অভিযোগ করুক না কেন) পশ্চিমবঙ্গ নয় বন্দে ভারতে ঢিল ছোড়ার ঘটনা আদপে ঘটেছে বিহারের কিষানগঞ্জ এলাকা দিয়ে পাস করার সময়। এরপরেই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে টুইট করে বলা হয়, “বিজেপি শুধু এবং শুধুমাত্র মিথ্যার রাজনীতি করে। ওরা বাংলাকে খারাপ দেখাতে চায় সব সময়।”
এদিকে গঙ্গাসাগর থেকে কলকাতায় ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এটা বাংলায় হয় নি, বিহারে হয়েছে। গণতন্ত্রে ক্ষোভ থাকতেই পারে। ওরা যদি কিছু করে থাকে তারজন্য পুরো বিহারকে তো আর বদনাম করা যায় না।” বন্দে ভারত ট্রেন নিয়েও নিজের অবস্থানের কথা এতদিনে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “বন্দে ভারত কি। একটা পুরানো ট্রেনকে নতুন করে রং করে দিয়েছে শুধু ইঞ্জিনটা বাদ দিয়ে। অনেক পুরোনো ট্রেনের রেক এখান থেকে উইথড্র করে নেওয়া হয়েছে। আমার সময়ে আমি বছরে অন্তত একশোটা করে নতুন ট্রেন দিতাম, আর এই এগারো বছরে একটাও নতুন ট্রেন দেওয়া হয় নি এই একটা ছাড়া।” এরপর‌ই মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন “যারা ভুল বার্তা দিয়ে ফেক নিউজ ছড়াচ্ছেন বাংলাকে অসম্মান করার জন্য, আপনারা অনেকেই আমাদের বিরুদ্ধে বাংলার বদনাম করেছেন। যারা এটা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কিন্তু আইন আইনের পথে চলবে।” মুখ্যমন্ত্রী আর‌ও বলেন “বাংলায় ঘটেনি এই ঘটনা বিহারে ঘটেছে। বিহারের মানুষের ক্ষোভ থাকতেই পারে। গণতন্ত্রে ক্ষোভ থাকতেই পারে।

তার জন্য ওরা যদি একটা ঘটনা ঘটিয়েই থাকে তাতে তো বিহার কে অপমান করা যায় না।” সেইসময়‌ই পরিষ্কার হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন যারা এইভাবে ফেক নিউজ ছড়িয়ে বাংলাকে অসম্মান করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারির পরিপ্রেক্ষিতে এবার সেইসব বিজেপি নেতাদের (শুভেন্দু, সুকান্ত সহ যারা ট্রেনে পাথর ছোড়া নিয়ে রাজ্যকে দোষারোপ করেছিলো) বিরুদ্ধে আইনি পথে হাঁটার পথে যেতে পারে রাজ্য সরকার অথবা ঘুরপথে জনস্বার্থ মামলাও করা হতে পারে বলেই অভিমত অনেকের।